মানসিক ব্যাধি মানসিক স্বাস্থ্যের একটি দিক। সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় বিশ্বাস সেইসাথে সামাজিক নিয়মগুলি মাথায় রেখে এই রোগ নির্ণয় করা উচিত।কিছু কারনে এসব ঘটে যেমন :
১. মানসিক রোগ লক্ষণ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা না থাকা।
২. মানসিক রোগ সম্পর্কে অজ্ঞতা,কুসংস্কার, ভুল ধারণা।
৩. বিয়ে দেয়া মানসিক রোগের ভাল চিকিৎসা এমনটা মনে করা।
৪. মানসিক রোগ সম্পর্কে ভীতি কাজ করা।
৫. মানসিক রোগের ওষুধ খেলে খালি ঘুম ছাড়া অন্য কিছু হয়না এমনটা ভাবা।
৬. অতিরিক্ত স্মার্ট ফোন আসক্তি,খারাপ সংগীদের সাথে মেলামেশা করা।
৭. পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় না হওয়া, বাবা মা ও সন্তানদের মধ্যে মিল না থাকা।
৮. জোর করে সন্তানদের উপর বাবা মার মতামত চাপিয়ে দেয়া,মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে তা ভংগ করা।
৯. মানসিক রোগী মানেই 'পাগল ' এমনটা ভাবা।
১০. সন্তানদের কি ইচ্ছা অনিচ্ছা তার গুরুত্ব না দিয়ে মানুষ কিসে ভাল বলবে,সামাজিকভাবে কে কিভাবে ব্যাপারে গুরুত্ব দিবে তার উপর নির্ভর করে।
কিন্তু এগুলোর উপর ভিত্তি করে না থেকে সঠিক তথ্য জানা দরকার।যেমন :
১. বর্তমান ধারণা অনুযায়ী, জিন এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার জটিল পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশ ও কর্মক্ষমতার বিপর্যয় ঘটলে মানসিক রোগ দেখা দিতে পারে।এটা জ্বীন ভূতের আছরের কারনে হয়না।
২.মানসিক রোগের জন্য চিকিৎসা এবং সহায়তা মানসিক হাসপাতাল, ক্লিনিক বা সম্প্রদায়িক বিভিন্ন ধরণের মানসিক স্বাস্থ্য পরিসেবাগুলিতে প্রদান করা হয়।
৩. অনেক মানসিক রোগের জন্য একটি প্রধান ব্যবস্থা হল মানসিক ওষুধ প্রয়োগ যার আবার ভিন্ন ভিন্ন প্রধান গ্রুপ আছে । ড্রাগ গ্রুপগুলির বিভিন্ন প্রচলিত নাম থাকা সত্ত্বেও যে রোগগুলির মধ্যে তারা আসলে উপযুক্ত এবং কার্যকরী সেখানেই তাদের ব্যবহার করতে হবে ।
৪. মানসিক রোগের জন্য আরেকটি চিকিৎসা হল সাইকোথেরাপি । এটি বিভিন্ন ধরনের হয় ।CBT বা Cognitive behavioural therapy ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় যা একটি নির্দিষ্ট ব্যাধির সঙ্গে যুক্ত ধারণা এবং আচরণের নিদর্শন পরিবর্তন করে।
৫. ক্রিয়েটিভ থেরাপিও কখনও কখনও ব্যবহৃত হয়, যেমন- সঙ্গীত থেরাপি, আর্ট থেরাপি বা নাটক থেরাপি । লাইফস্টাইলের সমন্বয় এবং সহায়ক ব্যবস্থাগুলি প্রায়ই ব্যবহৃত হয় তাছাড়া সামাজিক সংস্থাগুলি ব্যবহার করা যেতে পারে।
৬. পিতা-মাতার সাহায্য সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে, এবং প্রমাণগুলি নির্দেশ করে যে বাবা-মা তাদের সন্তানদের সাথে আরও কার্যকরভাবে সাহায্য করতে পারে যাতে তারা মানসিক স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয় দিকগুলো মোকাবেলা করতে পারে।পারিবারিক, সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করতে হবে।
৭. বিয়ে কোন মানসিক রোগের সমাধান না এ বিষয়ে সচেতন করে তোলা। মানসিক রোগ চিকিৎসা করলে লজ্জার কোন কারণ নেই বরং তা লুকিয়ে রাখা অন্যায়।
৮. মানসিক রোগের কারণে অনেকে চুরি,খুন,ধর্ষণ এসব করতে পারে।তাই রোগ অল্প থাকতেই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া।
৯. মানসিক রোগী মানেই 'পাগল ' না।এটা এক ধরনের অসুস্থতা যা অনান্য শারিরীক রোগের মতই চিকিৎসাযোগ্য।
১০. যেকোন বয়সেই মানসিক রোগ দেখা দিতে পারে।তাই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।
ডা. ফাতেমা জোহরা
MBBS(DU), MD Psychiatry (BSMMU), FMD(USTC), DHMS(BD)
মনোরোগ, যৌনরোগ ও মাদকাসক্তি নিরাময় বিশেষজ্ঞ
সহকারী অধ্যাপক
মানসিক রোগ বিভাগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/Dr-Fatema-Zohra-Psychiatrist-Specialist-in-Family-Medicine-293734764582169