বর্তমানে অ্যাসিডির সমস্যা এখন প্রত্যেকটা মানুষের ঘরে ঘরে।বিশেষ করে রমজানে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবারের কারনে অ্যাসিডির সমস্যা বেড়েই চলছে।
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটি হল পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। সাধারণত অতিরিক্ত ঝাল, মসলাযুক্ত খাবার, ভাজাপোড়া জাতীয় খাবারে এটি বেশি হতে পারে। কারণ এসব খাবারকে হজম করতে অতিরিক্ত এসিডের দরকার হয়।এ এসিডের পরিমাণ বেশি হলে আমাদের পাকস্থলীর চামড়া ভেদ করে এবং আলসার (ঘা) তৈরি হয়, তখন আমরা ব্যথা অনুভব করি।
আসুন জেনে নেই অ্যাসিডিটি থেকে বাঁচার কিছু উপায়ঃ
- প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খাবেন।একবারে বেশি পরিমাণে না খেয়ে অল্প করে বারবার খাবেন এবং খাবার ভাল করে চিবিয়ে খাবেন।
- ঘুমানোর কমপক্ষে ২ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন।
- চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া পেট খারাপ বা বমির ওষুধ কিনে খাওয়া পরিহার করুন।
- অতিরিক্ত তেল ও মসলা দেয়া খাবার খাবেন না। বাইরের খাবার না খেয়ে বাড়ির তৈরি খাবার খান। তাজা খাবার খান, স্টোর করা বা ফ্রোজেন ফুড কম খাবেন।
- শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমান । নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা অনেক সময় এসব সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। তাই দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে চেষ্টা করুন।
- তৈলাক্ত খাবার বাদ দিতে চেষ্টা করুন। রাতের খাবারটি যেন হালকা হয়। শাকসবজি, ছোট মাছ এসব দিয়ে রাতের মেন্যু সাজান।
- খাওয়ার পরপরই অনেক বেশি পানি পান করার প্রবণতা বাদ দিন।খাবারের আগে ১ গ্লাস পানি পান করুন এবং খাবার শেষে অন্তত ৩০ মিনিট পর পানি পান করুন।
- দিনে কিংবা রাতে খাওয়ার পরপরই অনেকে শুয়ে পড়তে পছন্দ করেন। এটা না করে কিছুক্ষণ আস্তে আস্তে হাঁটাচলা করতে পারেন অথবা বসে থাকতে পারেন সোজা হয়ে। অন্তত ৩০ মিনিট পর ঘুমাতে যান।
ন্যাচারাল কিছু খাবার যা নিয়মিত আপনার খাদ্য তালিকায় রাখলে অ্যাসিডিটি আপনার ধারে-কাছেও ঘেঁষতে পারবে না। তাহলে জেনে নেওয়া যাক কোন কোন খাবার গ্রহণে ওষুধ ছাড়াই অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি পাবেন-
* শশা: শশা পেট ঠাণ্ডা রাখতে অনেক বেশি কার্যকর। এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড ও অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাসের উদ্রেক কমায়।
* দই: দই আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। এতে করে দ্রুত খাবার হজম হয়, ফলে পেটে গ্যাস হওয়ার প্রবণতা কমে আসে।
* আদা: আদা সব চাইতে কার্যকরী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদানসমৃদ্ধ খাবার। পেট ফাঁপা ও পেটে গ্যাস হলে আদা কুচি করে লবণ দিয়ে খান, দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্যাসের সমস্যা সমাধান হবে।
* পেঁপে: পেঁপেতে উপস্থিত এনজাইম হজমশক্তি বাড়ায়। নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলেও গ্যাসের সমস্যা কমে।
* রসুন: অ্যাসিডিটির সমস্যা কমাতে রসুনের কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে এক কোয়া রসুন খেয়ে ফেললেই স্টমাকে অ্যাসিড ক্ষরণের মাত্রা স্বাভাবিক হতে শুরু করে। ফলে গ্যাস সংক্রান্ত বিভিন্ন উপসর্গ ধীরে ধীরে কমে যেতে শুরু করে।তবে মাএাতিরিক্ত রসুন খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
* কলা ও কমলা: কলা ও কমলা পাকস্থলির অতিরিক্ত সোডিয়াম দূর করতে সহায়তা করে। ফলে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও কলার দ্রবীভূত হতে সক্ষম ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ক্ষমতা রাখে। কোন ধরনের শারীরিক সমস্যা না থাকলে সারাদিনে অন্তত দুটি কলা খান। পেট পরিষ্কার রাখতে কলার জুড়ি মেলা ভার।
* লবঙ্গ: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, লবঙ্গে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান শরীরে প্রবেশ করার সাথে সাথেই গ্যাসের প্রকোপ কমতে সময় লাগে না। তাই এবার থেকে বেশি মাত্রায় খাবার খাওয়ার পর বুক জ্বালা ও ঢেঁকুর উঠলে দু-একটি লবঙ্গ খেয়ে ফেলতে ভুলবেন না যেন!
* অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরায় উপস্থিত নানাবিধ খনিজ একদিকে যেমন ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি হজম ক্ষমতার উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, অ্যালোভেরার উপাদান পেটে তৈরি হওয়া অ্যাসিডের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা একেবারে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
* পুদিনা পাতা: এক কাপ পানিতে ৫টি পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খান। পেট ফাঁপা, বমিভাব দূরে রাখতে এর বিকল্প নেই।
* ডাবের পানি: ডাবের পানি খেলে হজম ক্ষমতা বাড়ে এবং সব খাবার সহজেই হজম হয়ে যায়। এছাড়া গ্যাসের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায় নিয়মিত ডাবের পানি খেলে। তাই সম্ভব হলে প্রতিদিন ডাবের পানি খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাহলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।
এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে।
www.royalbangla.com/JenifaJasia
লেখক
পুষ্টিবিদ জেনিফা জাসিয়া
ওবেসিটি । ডায়েট থেরাপি । পুষ্টি বিষেজ্ঞ
অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য কল করুন
০১৭৩৮-৭৪৫৪৬৫
চেম্বার
পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার লিঃ
ঠনঠনিয়া,শেরপুর রোড ( ভাই পাগলা মাজারের পাশে),বগুড়া
রোগী দেখার সময়
শনি থেকে বৃহস্পতিবার ,বিকাল ৪ টা থেকে রাত ৮টা
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/JenifaJasia