হস্তমৈথুন একেবারে বদভ্যাসে পরিণত হলে তা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরী। অনেকে এমন আছে প্রায় প্রতিরাতেই পর্নমুভি দেখে এবং হস্তমৈথুন করে। এরকম বদভ্যাস অচিরেই সর্বনাশ ডেকে আনবে।নিচে হস্তমৈথুন নিয়ন্ত্রণে কিছু টিপস শেয়ার করা হলো ; আশা করা যায় এগুলো অনুসরন করলে হস্তমৈথুন নিয়ন্ত্রণ করা পুরোপুরি সম্ভব।
১) হস্তমৈথুনে বাজেভাবে এডিক্টেড হলে কখনোই একা থাকবেন না,বন্ধুদের সাথে বেশি সময় দিতে পারেন, ঘরে সময় কম কাটাবেন, বাইরে বেশি সময় কাটাবেন। ব্যায়াম করতে পারেন, জিমে ভর্তি হতে পারেন , সাইকেল নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। ক্লাসমেটদের সাথে একসাথে পড়াশুনা করতে পারেন। লাইব্রেরি বা কফি শপে গিয়ে সময় কাটাতে পারেন। সবচেয়ে ভাল হয় ছাত্রজীবনে সিংগেল রুমে না থাকা। সিংগেল রুমে যারা থাকে তারা বেশি আসক্ত হয়। অন্যের সাথে রুম শেয়ার করলে একাকিত্ব তৈরি হয় না । এই একাকিত্বই সর্বনাশ ডেকে আনে।
২) কোন কোন সময় হস্তমৈথুন করার আগ্রহ বেশি জাগে, সেই সময়গুলো চিহ্নিত করুন। অনেকের মনে বাথরুম বা গোসল করার সময় এমন ইচ্ছে জাগে সেক্ষেত্রে এই কাজগুলো দ্রুত করার চেষ্টা করুন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে যদি এমন ইচ্ছে জাগে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে শখের কোন কাজ করতে পারেন। গান শুনতে পারেন। আবার হালকা কোনও ব্যায়াম করতে পারেন। শরীর ক্লান্ত থাকলে হস্তমৈথুন করার ইচ্ছে নিভে যায়।
৩) হস্তমৈথুন থেকে দূরে থাকার সবচেয়ে মোক্ষম উপায় হলো শখের কাজ করা। যেমন বাগান করা, ব্যায়াম করা , খেলাধুলা করা, প্রার্থনা করা অর্থাৎ নিজেকে যেসব কাজ ভাল লাগে তাতে ব্যস্ত রাখা। এছাড়াও রয়েছে যেসব বিষয় ভালো লাগে সেসবের চর্চা করা, যেমন গনিত হতে পারে, সাহিত্য হতে পারে, শিল্প হতে পারে, আবার ফেসবুক বা ইউটিউবে যেসব কন্টেন্ট খু্বই ভালো লাগে তাও দেখা যেতে পারে। যেমন অনেকে গান শুনতে পছন্দ করে, অনেকে ওয়াজ শুনে, অনেকে ধর্মীয় শ্লোক শোনে, কেউ কৌতুক শোনে বা দেখে অনেকে বিজ্ঞান বিষয়ক কন্টেন্ট দেখতে পছন্দ করে ইত্যাদি। অর্থাৎ নিজের ভাল লাগার বিষয়টি আগে চিহ্নিত করতে হবে।
৪) বিয়ে করার বয়স ও সামর্থ্য হলে বিয়ে করা উচিত। তবে সামর্থ্য না থাকলে ধৈর্য ধরা উচিত। অনেকে আয় রোজগারের পথ না করে বিয়ে করে চরম ধরা খেয়েছেন। বিষয়টি অবশ্যই বিবেচনার দাবি রাখে।
৫) মেডিটেশন বা ধ্যান একটি কার্যকর পদ্ধতি। এখানে বলা উচিত ধর্মীয় প্রার্থনা এক প্রকার মেডিটেশন। যদিও ধর্মীয় বিষয়ে মতভেদ আছে। এছাড়া যোগ ব্যায়াম করতে পারেন।
৬) নিজেকে যথাসম্ভব ব্যস্ত রাখা এবং নিজেকে কোন একটা টার্গেট বেধে দেয়া। সেটা যেমন দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে আবার স্বল্পমেয়াদীও হতে পারে। স্বল্পমেয়াদী টার্গেট যেমন একদিনের একটি প্ল্যান একজন ব্যক্তিকে অনেক সুন্দরভাবে চালিত করতে পারে। কিন্তু কিন্তু লক্ষ্যহীন জীবন-যাপন বিপজ্জনক।
৭) ধৈর্য ধারন করা । একদিনেই নেশা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না । একাগ্রতা থাকলে ধীরে ধীরে যে কোন নেশা থেকেই বের হয়ে আসা যায়। মাঝে মাঝে ভুল হয়ে যাবে। তখন হতাশ হয়ে সব ছেড়ে দেবেন না। চেষ্টা করে যান।
৮) বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সবার সাথে বেশি সময় কাটান। একা সময় খুব কম কাটাবেন। একা থাকলেই বাজে চিন্তা বেশি আসে।
৯) বেশি রাত জাগা যাবেনা। আর রাতে অবসর সময়ে ক্রিয়েটিভ কিছু করার চেষ্টা করতে পারেন। যেমন কবিতা আবৃত্তি শেখা, ইংরেজি শেখা, কোন নতুন বিদেশী ভাষা শেখা বা প্রোগ্রামিং শেখা প্রভৃতি।
১০) সেক্স সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করার চেষ্টা করুন। সেক্সুয়াল ফিটনেস কিভাবে ধরে রাখা যায় এসব বিষয়ে জানার চেষ্টা করুন। এই ওয়েবসাইটের কন্টেন্টগুলো পড়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে পারেন।
১১) গাছ, পাখি, ফুল, নদী , প্রাণি, প্রকৃতি এসব নিয়ে আগ্রহী হতে পারেন। বিকৃতি অনেকটা কমে আসবে। যেমন আপনার মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারের কোন মনোমুগ্ধকর ছবি রাখুন যা আপনাকে ভিন্ন কিছু অনুভুতি এনে দিতে পারে।
১২) ছোট ছোট সময়ভিত্তিক টার্গেট সেট করুন। ধরুন প্রথম টার্গেট টানা দুইদিন হস্তমৈথুন করবেন না। দুইদিন না করে পারলে ধীরে ধীরে সময় বাড়াবেন। এভাবে আস্তে আস্তে সফল হতে পারবেন।
১৩) যখন তখন বিছানায় শোবেন না। কোথাও বসলে অন্যদের সঙ্গ নিয়ে বসুন। সব সময় মানুষের সাথে থাকার চেষ্টা করতে পারেন।
১৪) হস্তমৈথুনে অধিক পরিমান ক্যালরী খরচ হয়,তাতে শরীর খুব দ্রুত ভেঙে যায়৷ একারনে যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণের জন্য নিয়মিত বিভিন্ন ফল, ডিম, দুধ, ছোলা খাওয়ার অভ্যাস করুন। । বেশি করে ফল খান, এর সাথে দুধ , ডিম, মাছ, চিকেন, মধু এসব বেশি করে খান।
১৫) প্রথমেই মনে রাখতে হবে, হস্তমৈথুন বা স্বমোহন এর জন্য চরম অনুশোচনা বা চরম অপরাধবোধে ভুগবেন না । এটা মানুষের একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। অনেকেই এ বদভ্যাসে যুক্ত। তবে ছাড়তে সময় লাগে। আরমনে রাখবেন আপনি মানুষ। আর মানুষ মাত্রই ভুল করে। এটা করে ফেলার পর যদি মনে করেন ভুল হয়ে গেছে তো সেজন্য অনুশোচনা করতে পারেন তবে নিজেকে শাস্তি দেবেন না। বরং দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হোন যাতে ভবিষ্যতে মন শক্ত রাখতে পারেন।
১৬) যেসব জিনিস আপনাকে হস্তমৈথুনের দিকে নিয়ে যায় , সেগুলো ছুড়ে ফেলুন, সেগুলো থেকে দূরে থাকুন।যদি মাত্রাতিরিক্ত হস্তমৈথুন থেকে সত্যি সত্য মুক্তি পেতে চান তাহলে পর্ণ মুভি বা চটির কালেকশন থাকলে সেগুলো এক্ষুনি নষ্ট করে ফেলুন। পুড়িয়ে বা ছিড়ে ফেলুন। হার্ডড্রাইভ বা মেমরি থেকে এক্ষুনি ডিলিট করে দিন। ইন্টারনেট ব্যবহারের আগে ব্রাউজারে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল-এ গিয়ে এডাল্ট কন্টেন্ট ব্লক করে দিন।
১৭) অযথা সময় নষ্ট না করে সময়টা কাজে লাগান। জীবনটা কে সৃজনশীল কর্মকাণ্ড দিয়ে ভরিয়ে তুলুন। সব সময় নতুন কিছু করার দিকে ঝোঁক থাকলে হস্তমৈথুনের ব্যাপারটা মাথা থেকে দূর হয়ে যাবে। এই সাথে আরো সব বাজে জিনিসগুলোও জীবন থেকে হারিয়ে যাবে। নতুন ভাবে জীবনকে উপলব্ধি করতে পারবেন, বেঁচে থাকার নতুন অর্থ খুঁজে পাবেন।লেখালেখি করতে পারেন, গান-বাজনা শিখতে পারেন, আঁকাআঁকি করতে পারেন, অথবা আপনি যা পারেন সেটাই করবেন।
কিছু টিপস:
১) কম্পিউটারে পর্ণ ব্লকিং সফটওয়ার ইনস্টল করে নিন। আজব একটা পাসওয়ার্ড দিয়ে রাখেন যাতে পরে ভুল যান। অথবা কোন বন্ধুকে দিয়ে পাসওয়ার্ড দিন। নিজে মনে রাখবেন না।
২) হস্তমৈথুন একেবারেই ছেড়ে দিতে হবে না। নিজেকে বোঝাবেন যে মাঝে মাঝে করবেন। ঘনঘন নয়।
৩) যারা বাজে বিষয় নিয়ে বা মেয়েদের নিয়ে বা পর্ণ মুভি বা চটি নিয়ে বেশি আলোচনা করে, তাদেরকে এড়িয়ে চলুন।
৪) ভিডিও গেম খেলতে পারেন। এটাও হস্তমৈথুনের কথা ভুলিয়ে দেবে।
৫) নিজের পরিবারের কথা চিন্তা করবেন, আপনার সাথে যারা আছে তাদের কথা ভাববেন। পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলার জন্য একটি সাপ্তাহিক রুটিন বানান।
৬) গার্লফ্রেণ্ড বা প্রেমিকাদের সাথে শুয়ে শুয়ে, নির্জনে বসে প্রেমালাম করবেন না।
৭) ফোনসেক্স অবশ্যই বর্জন করবেন