দ্রুত বীর্যপাত কী? কেন হয়?
দ্রুত বীর্যপাত(premature ejaculation) পুরুষদের একটি সাধারণ যৌন সমস্যা। এক থেকে দেড় মিনিটের আগে যদি পুরুষের বীর্যপাত বা ইজাকুলেশন হয়ে যায়, একে আমরা সাধারণত দ্রুত বীর্যপাত বা প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন বলি। পুরুষ বা তার সঙ্গীনী যতটুকু সঙ্গমের আশা করে তার চেয়ে অনেক দ্রুত যদি বীর্যপাত ঘটে সেটা মোটেও কাম্য নয় এবং এতে একজন বা উভয়েরই কষ্ট হয়। রতিকাজ(foreplay) শুরু হওয়ার সাথে সাথে কিছু পুরুষের বীর্যপাত হয়। অনেকে সঙ্গীর ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন, আবার কারো কারো অনুপ্রবেশের পরে খুব দ্রুত বীর্যপাত হয়। যা-ই হোক না কেন, অকাল বীর্যপাত হতাশা সৃষ্টি করতে পারে এবং একজন পুরুষ এবং তার সঙ্গীনীর মধ্যে মন কষাকষি সৃষ্টি করতে পারে।
দ্রুত বীর্যপাতের কারণসমুহ দুইপ্রকার:
- ক) পুরুষাঙ্গের শিথিলতা:সব পুরুষ যৌনমিলনের সময় তাদের লিঙ্গের উত্থান ঠিকমতো হবে কি না তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন কিংবা কতক্ষণ লিঙ্গ উত্থিত অবস্থায় থাকবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন, সেসব পুরুষের দ্রুত বীর্যস্খলন ঘটে।
- খ)ঘুমের অসুবিধা।
- গ) শারীরিক দূর্বলতা।
- ঘ)মাদকাসক্তি বা নেশাগ্রস্ততা।
- ঙ) মূত্রনালির সংক্রমন ও প্রদাহ।
- চ) বিভিন্ন রোগ, যেমনঃ সিফিলিস, গনোরিয়া ইত্যাদি।
- ছ) কোন মাদকদ্রব্য বা ওষুধ সেবন,যার কারণে দ্রুত বীর্যপাত হচ্ছে।
- জ) ডায়াবেটিস।
- ঝ) থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা।
- ঞ) বিভিন্ন হরমোন জনিত সমস্যা।
- ট)হৃদরোগ।
- ঠ) সার্জারি বা আঘাত জনিত কারণে স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হলে।
দ্রুত বীর্যপাতের কারণসমুহ দুইপ্রকার:
জৈবিক কারণ সমূহঃ
- ক) পুরুষাঙ্গের শিথিলতা:
সব পুরুষ যৌনমিলনের সময় তাদের লিঙ্গের উত্থান ঠিকমতো হবে কি না তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন কিংবা কতক্ষণ লিঙ্গ উত্থিত অবস্থায় থাকবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভোগেন, সেসব পুরুষের দ্রুত বীর্যস্খলন ঘটে।
- খ)ঘুমের অসুবিধা।
- গ) শারীরিক দূর্বলতা।
- ঘ)মাদকাসক্তি বা নেশাগ্রস্ততা।
- ঙ) মূত্রনালির সংক্রমন ও প্রদাহ।
- চ) বিভিন্ন রোগ, যেমনঃ সিফিলিস, গনোরিয়া ইত্যাদি।
- ছ) কোন মাদকদ্রব্য বা ওষুধ সেবন,যার কারণে দ্রুত বীর্যপাত হচ্ছে।
- জ) ডায়াবেটিস।
- ঝ) থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা।
- ঞ) বিভিন্ন হরমোন জনিত সমস্যা।
- ট) হৃদরোগ।
- ঠ) সার্জারি বা আঘাত জনিত কারণে স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হলে।
মানসিক কারণসমুহ:
- ক) দুঃশ্চিন্তা/ মানসিক চাপ /ডিপ্রেশন।
- খ) আত্ম বিশ্বাসের অভাব
- গ) সঠিক যৌন শিক্ষার অভাব।
- ঘ) প্রি ম্যারাইটাল বা বিবাহ পূর্ব কাউন্সিলিং এর অভাব।
- ঙ) সেক্স সম্পর্কে ভুল ধারনা।
- চ) কম বয়সে সহবাস।
- ছ) অতিরিক্ত প্রত্যাশা।
- জ)আগের ব্যর্থতা বার বার মনে করা।
- ঝ)সম্পর্ক অবনতি বা দাম্পত্য বা পারিবারিক কলহ।
- ঞ)চাকরি -ব্যবসা জনিত কারণে দূরে থাকা এবং অনেকদিন পরপর শারীরিক সম্পর্কের সুযোগ পাওয়া।
দ্রুত বীর্যপাতের কুফল বা ফলাফল কী?
বারবার দ্রুত বীর্যপাতের ফলে পুরুষ হতাশাগ্রস্থ হয়ে যায়। স্ত্রীর সামনে লজ্জিত হতে হয়। মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। যৌন মিলনের ইচ্ছা থাকে না বরং ভয় কাজ করে। কখনও কখনও সংসার জীবনে ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে।
দ্রুত বীর্যপাতের জন্য চিকিৎসা:
ক) যৌন কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে:
১.পজ ও স্কুইজ টেকনিক:এই পদ্ধতিতে যৌন মিলনের সময় আপনার যখন মনে হবে বীর্যপাত হবে, তখন আপনি যৌন মিলন বন্ধ করে দিবেন, প্রয়োজনে লিঙ্গ যোনিদ্বার হতে বের করবেন এবং আপনার সঙ্গীকে বলবেন আপনার লিঙ্গের মুন্ডি ও দেহের সংযোগস্থলে চেপে ধরতে অথবা আপনি নিজেও চেপে ধরতে পারেন। এতে করে আপনার বীর্যপাতের ইচ্ছা দূরীভূত হয়ে যাবে।এটা অবশ্য অনুশীলনের ব্যাপার। আপনার প্রথম প্রথম নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যা হতে পারে, তবে অনুশীলনের সাধ্যমে এ পদ্ধতিতে সাফল্য অবশ্যই আসে।
২. সহবাসের পজিশন পরিবর্তনের মাধ্যমে:এই পদ্ধতিতে আপনার বীর্যপাতের সম্ভবনা তৈরি হলে, আপনি আপনার সঙ্গীকে উপরে উঠে সহবাস করতে বলবেন বা ভিন্ন পজিশনে চেষ্টা করুন , এতে আপনি আপনার বীর্যপাতকে দীর্ঘায়িত করতে পারবেন।
৩.একের অধিকবার মিলন এর মাধ্যমে: কয়েকবার বা একাধিক বার মিলন।এতে বীর্যথলিতে বীর্য না থাকার কারনে সহজেই সময় বৃদ্ধি পায়। তবে এই অভ্যাস নিয়মিত না করা উত্তম।
৪. কনডম ব্যবহারের মাধ্যমে: অবশ্যই মোটা কনডম ব্যবহার করবেন, যা আপনার অনুভূতিকে কমিয়ে দিবে।সেসব কনডম পরিহার করুন যা আপনার অনুভূতিকে বাড়িয়ে দিবে।কিছু অবশকারক কনডম বাজারে পাওয়া যায় যেমন ক্যারেক্স পাওয়ার শট ডিলে ইত্যাদি। এছাড়াও ডাবল কনডম পরেও দারুন সুবিধা পাওয়া যায়
৫. আস্তে আস্তে শ্বাস নিন: যখন আপনার মনে হবে বীর্যপাত হবে, তখন আস্তে আস্তে অর্থাত্ গভীর শ্বাস নিন,কয়েকবার করুন রাতারাতি না হলেও একটা সময়ে গিয়ে এটা কাজ করে ।
৬. অন্যমনস্ক হওয়ায় মাধ্যমে: এমনকোন বিষয়ে মনো সংযোগকরুন, যা আপনার অনুভূতিকে কমিয়ে দিবে। যেমন দুঃখজনক কোনো স্মৃতি,কঠিন হিসাব, উল্টোদিক থেকে গোনা ইত্যাদি ।
৭. মুখে সুপরি, দারুচিনি ভরে রাখুন ।যৌন সঙ্গমের সময়, মুখে সুপরি,দারুচিনি ভরে রাখুন। দেখবেন, সঙ্গম দীর্ঘায়িত হবে। এটা কিছুটা হলেও মনোযোগ কে সরিয়ে দেয়। প্রয়োজনে চুইংগাম চিবুতে পারেন।
খ) কাউন্সেলিং-এর মাধ্যমে:
আপনি যদি চিন্তা করেন আপনার লিঙ্গ উত্থিত হবে না, আপনি আপনার স্ত্রীকে পরিপূর্ন তৃপ্তি দিতে পারবেন না, তবে আপনি পারবেন না।আপনার দ্রুত বীর্যপাত হয়ে যাবে।সুতরাং মনে সাহস রাখবেন। আত্মবিশ্বাস নিয়ে , মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে সঙ্গীনীর কাছে যাবেন। দ্রুত বীর্যপাতের জন্য যৌন থেরাপিস্টের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ এমনকি মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরাণপন্ন হতে পারেন। এছাড়াও সাইকোথেরাপিস্ট এর শরাণাপন্ন হওয়া যেতে পারে। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে অবনতি হলেও দ্রুত বীর্যপাত হতে পারে| মনোবিজ্ঞানীদের মতে, পূর্বের কোন অবৈধ যৌন মিলন বা পাপবোধ বিশেষ করে হস্তমৈথুন নিয়ে আপনার মনে অপরাধ বোধ হলেও এ ধরণের ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অবৈধ যৌন মিলন এড়িয়ে চলুন।
গ) ডায়েট এর মাধ্যমে :
দ্রুত বীর্যপাত রোধে কম কোলস্টেরল ও কম চিনি সমৃদ্ধ খাবার খান। প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় এক কাপ গরম দুধের সাথে ১০ টি বাদাম (পানিতে ভিজিয়ে রাখা), জাফরান, এক চিমটি আদা ও এক চিমটি এলাচ মিশিয়ে খান। যৌন জীবনকে উপভোগ করতে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খান। লিঙ্গ শিথিলতা কমানোর ডায়েট জানতে ক্লিক করে পড়ুন। এছাড়াও যৌন জীবনে সুখী হওয়ার ডায়েট সম্পর্কে জানতে পড়ুন।
ঘ) ব্যায়াম এর মাধ্যমে :
কেগেল ব্যায়াম - কেগেল ব্যায়াম সহ আরও কিছু এক্সারসাইজ আছে যা যৌন পারফরমেন্স উন্নত করতে সহায়ক। ব্যায়াম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন।
ঙ) ঔষধের মাধ্যমে সমাধান:
১। পেনাইল সংবেদন হ্রাস - লোকাল আনেস্থেশিয়াযুক্ত স্প্রে এবং ক্রিম পেনাইল সংবেদন হ্রাস করতে ব্যবহার করা যেতে পারে তবে তা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োগ করা উচিত। দুটি কনডম ব্যবহার করলেও সংবেদন কমাতে সহায়তা করতে পারে।
যাদের পেনিসে সুড়সুড়ি বেশি, হাইপারসেন্সেটিভ তারা লিডোকেইন জেল / স্প্রে নিতে পারেন ১০ মিনিট আগে পেনিসে লাগাবেন ঢুকানোর আগেই অবশ্যই ধুয়ে নিতে হবে।
ক্যারেক্স পাওয়ার শট ডিলে কনডম অথবা সেনসেশন কনডম ব্যবহার করতে পারেন।
২।কোন যৌনরোগ আছে কিনা তা চিকিৎসকের মাধ্যমে কনফার্ম হওয়া উচিত।
৩।দ্রুত বীর্যপাত যদি ইরেকটাইল ডিসফাংশনের(erectile dysfunction) সাথে সম্পর্কিত হয়, ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের ঔষধ সেবন করা যেতে পারে তবে তা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শে। ইরেক্টাইল ডিসফাংশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। মনে রাখবেন দ্রুত বীর্যপাত ও ইরেক্টাইল ডিসফাংশন আলাদা সমস্যা। তবে অন্য কোন উপায়ে কাজ না হলে ঔষধ হলো শেষ সমাধান । কিন্তু আগে লাইফস্টাইল পরিবর্তনের মাধ্যমে যৌনসমস্যা দূর করার চেষ্টা করুন। সাধারণত চিকিৎসকগণও সহজেই রোগীকে ঔষধ প্রেস্ক্রাইব করতে চান না। যৌনজীবনে সুখী হতে সবচেয়ে দরকারি হল যৌন শিক্ষা। এই ওয়েবাসাইটের আর্টিকেলগুলো পড়ে দেখতে পারেন। ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করেও জানতে পারেন। মনে রাখবেন কোন কবিরাজী উত্তেজক ঔষধ হুট করে খাবেন না। এগুলো সাময়িক। আপনার সমস্যা বোঝার চেষ্টা করুন। দেখবেন আপনি নিজেই আপনার সমস্যা সমাধান করতে পারবেন। গুড লাক।