অল্প কথায় লিঙ্গ ঠিক মতো শক্ত না হলে তাকে আমরা ইরেক্টাল ডিসফাংশন বলি যেটা গ্রাম অঞ্চলে ধ্বজ ভঙ্গ বা যৌন অক্ষমতা বলে থাকে!পুরুষের জীবনে কোন না কোন সময় কম বেশি এই সমস্যা হয়ে থাকে।বয়স ভেদে এটা ভিন্নরুপে দেখা দিতে পারে! আবার কারো লিঙ্গ উথান হলেও কিছুক্ষন পর নরম হয়ে যায় এটাও এক প্রকার ইরেক্টাইল ডিসফাংশন। যে পুরুষের লিঙ্গ ঠিকমতো শক্ত হয়না সেই পুরুষ ই তার কষ্ট বুঝে।নিজেকে তখন পুরুষবলে মনে হয় না।স্ত্রীর কাছে লজ্জিত হতে হয় আর এই লজ্জায় দিন দিন রোগটিকে বাড়িয়ে দেয়।মনের শান্তি চলে যায় যদিও তার অন্য কোন সমস্যা নাই। যাহোক নিচে এই সমস্যাটি মোকাবিলা করার জন্য অভিজ্ঞ ডায়েটিশিয়ান কর্তৃক প্রদত্ত ডায়েট পরিকল্পনা দেয়া হল।
সামর্থ্য ও সুযোগমত এপ্লাই করলে এটি খুবই ফলপ্রসূ হবে আশা করা যায়। (এখানে একটি কথা বলা দরকার , বেশিরভাগ লিঙ্গ শক্ত না হওয়ার রোগীগণ কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা বদহজম বা আমাশয় অথবা গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যার যেকোন একটি বা একাধিক সমস্যায় ভোগেন। এই সমস্যাগুলো আগে সেরে ওঠা জরুরী। এসব সমস্যা রেখে বিশেষ করে বদহজম এর সমস্যা রেখে কোন ডায়েট কার্যকর করা প্রায় অসম্ভব। )
স্বল্প মেয়াদে কার্যকর খাবার মিল্কশেক:
১. খেজুর , বাদাম ও দুধের মিল্কশেক । এটি খুবই কার্যকরি । সহবাসের একঘন্টা আগে সেবন করা যেতে পারে।
২. পাকা কলা,দুধ ও খেজুরের মিল্কশেক। এটিও কার্যকরি। সহবাসের একঘন্টা আগে সেবন করা যেতে পারে।
৩. গোল্ডেন মিল্ক: ডিম,দুধ,বাদামের মিল্কশেক ; এটিও কার্যকরী তবে হজমের সমস্যা আছে কিনা দেখে নিতে হবে।
দীর্ঘ মেয়াদে যৌনস্বাস্থ্য ভাল রাখতে সেক্স হরমোন বাড়ায় এমন খাবার হলো:
১. কালোজিরা
২. মধু
৩. গরুর মাংসবাদামসমুহ :
১.কাজুবাদাম
২.কাঠবাদাম
৩.পেস্তাবাদাম
৪.চিনাবাদাম
যেসব ফল সরাসরি ইরেক্টাইল ডিসফাংশন দূর করতে কাজ করে
১. খেজুর
২. ডালিম
৩. কলা
৪. কমলালেবু
এর বাইরে যেসব ভিটামিন , মিনারেলস এর দিকে খেয়াল রাখতে পারেন তা হলো:
১.ভিটামিন ডি
২. ভিটামিন সি
৩. ফলিক এসিড
৪. ভিটামিন বি-3
৫.জিংক
এবার নিচের টিপসগুলো মেনে চলুন। আশা করি ইরেক্টাইল ডিসফাংশন সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
১)সেক্স হরমোন সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খান,ডিম আর দুধের মিশ্রন সাথে তিন রকম বাদাম, কিস মিস, মধু,খেজুর, গরুর গোশত, বেদানা,তরমুজ প্রভৃতি
২)যৌন ব্যয়াম কেইগেল এক্সারসাইজ বা ইড়াপিঙ্গলা নাড়ির ব্যয়াম করুন। ইউটিউবে ভিডিও দেখে নিন । লিংক দেয়া থাকল। সকালে ১০ রাতে ১০ মিনিট করে।
৩) প্রতিমাসে স্বামী স্ত্রী দুইজনেই সেক্সকাউন্সিলিং সেশন ৩০ মিনিট, সেক্স থেরাপি প্রয়োজন মত অভিজ্ঞ রেজিস্ট্রারড্ চিকিৎসকের কাছ থেকে নিন, এতে আপনার মেডিসিনের উপর নির্ভরতা কমে যাবে, আত্মবিশ্বাস বাড়বে, যা উন্নত বিশ্বে খুবই জনপ্রিয় একটা বিষয়। একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক আপনার দূর্বলতা গুলে ধরিয়ে দিবে, সুন্দর যৌন মিলনের জন্য দিক নির্দেশনা দিবে।
৪) নিজে রোমান্টিক হন সাথে স্ত্রীকেও রোমান্টিক করে নিন।
৫) মাঝে মাঝে দুইজনে রসালাপ করুন,হট এবং ডার্টি কথা আলোচনা করুন।
৬) স্ত্রীকে আর্কষনীয় পোশাকপরতে বলুন।
৭) রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে যান,সকালে হাটাহাটি করুন,নিজের ওজন কে নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
৮) পারিবারিক, বা ব্যক্তিগত দুশ্চিন্তা, যাবতীয় নেশা পরিহার করুন,নিজের প্রতি আস্থা রাখুন।
৯) হৃদরোগ , ডায়াবেটিস,হরমোনের সমস্যা, কিডনি রোগ ইত্যাদি কোন সমস্যা থাকলে তার চিকিৎসা নিন।
১০) বেশির ভাগ পুরুষের সাময়িক কিছু দিনের জন্য সমস্যা হতে পারে, যা আপনাআপনি ভালো হয়ে যায়,আর যদি মাসের অধিক সময় ধরে সমস্যা চলতে থাকে কোন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে লো ডোজে ঔষধ ব্যবহার করা যেতে পারে আর দীর্ঘদিন ধরে সমস্যাই ভুগলে অবশ্যই দেরি বা লজ্জা না করে চিকিৎসা নিন।
১১) মনে রাখবেন খেজুর ,বাদাম,দুধের এই মিল্কশেকটি খেলে প্রচুর এনার্জি পাওয়া যাবে। ম্যাজিকের মতো নেক্সট ডে তে দূর্বলতা কেটে যাবে । কারো হজমের সমস্যা হলে সপ্তাহে ২-৩দিন যেকোনো সময় মিল্কশেক খেতে পারে। কারো দুধে সমস্যা থাকলে দুধ বাদ দিয়ে বাকিগুলোচিবিয়ে খেয়ে নিবেন। আলাদা চিনির প্রয়োজন নেই,কেননা খেজুর খুবই মিষ্টি হয়ে থাকে।
১২) কলা অত্যন্ত সহজলভ্য ফল এই কলা অসংখ্য গুণের আধার। হ্যাঁ, পুরুষের যৌন সক্ষমতা বৃদ্ধিতেও অত্যন্ত সহায়ক। কলা দেহে প্রচুর এনার্জি যোগায়। এতে আছে একটি বিশেষ এনজাইম bromelain, যা পুরুষের যৌন দুর্বলতা রোধ করতে সহায়ক। আছে প্রচুর ভিটামিন বি, যা যৌনতার সময় ভরপুর এনার্জি যোগায়।
১৩) গবেষকরা দেখেছেন যে যাদের দেহে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি রয়েছে তাদের তুলনায় যাদের ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি রয়েছে তাদের এই জাতীয় লিঙ্গ উত্থানজনিত অসুবিধাগুলি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। রক্তনালীগুলি সুস্থ রাখার জন্য এই ভিটামিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি ছাড়া রক্ত সঞ্চালন ভাল হয় না, এবং আপনার শরীরের প্রায় সমস্ত কিছু যথা আপনার লিঙ্গ শক্তিশালী হওয়ার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে।
১৪)ভিটামিন বি-৩ রক্ত প্রবাহ এবং ইরেকটাইল ফাংশন বাড়াতে সহায়তা করে এবং এর ঘাটতি ইরেক্টাইল ডিসফাংশন-এর অন্যতম কারণ।
একটি কথা মনে রাখবেন এত এত ভিটামিন ও মিনারেল এর কথা মাথায় রাখা সম্ভব নয়। ভিটামিন ও মিনারেল স্বাভাবিক রাখার উপায় হল ফল ও সবজি খাওয়া।ভিটামিন আসে ফল ও সবজি থেকে। তাই ফল ও সবজি নিয়মিত খাবেন। অনেকেই হয় ফল নয়ত সবজি এর যেকোন একটি বা দুটি থেকে দূরে থাকে। আবার খেলেও অনিয়মিত। আপনার টোটাল স্বাস্থ্য যদি ভাল থাকে তাহলে আপনার যৌনস্বাস্থ্যও ভাল থাকবে। তাই স্বাস্থ্যগত দূর্বলতা রেখে ভাল পারফরমেন্স আশা করা কঠিন।