বুক ব্যথা (chest pain) হলো একটি গুরুতর লক্ষণ, যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন হৃদরোগ, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, হজমের সমস্যা বা পেশির সমস্যা। বুক ব্যথার ক্ষেত্রে দ্রুত সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। নিচে বুক ব্যথায় করণীয় কিছু পদক্ষেপ দেওয়া হলো:
১. ব্যথার কারণ নির্ধারণের চেষ্টা করুন:
বুক ব্যথার ধরন এবং অবস্থান সম্পর্কে খেয়াল করুন।ব্যথা কি হার্টের সাথে সম্পর্কিত (হার্ট অ্যাটাক, এনজাইনা), শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা, বা অ্যাসিডিটির কারণে হচ্ছে তা বোঝার চেষ্টা করুন।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ: প্রচণ্ড চাপ বা সংকোচন অনুভূতি, বাম হাতে ব্যথা ছড়িয়ে পড়া, শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, ঠান্ডা ঘাম ইত্যাদি।
২. প্রাথমিক পদক্ষেপ নিন:
যদি হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগের লক্ষণ থাকে, তবে অবিলম্বে জরুরি চিকিৎসা সেবা (e.g., 999 বা স্থানীয় এম্বুলেন্স নম্বর) ডেকে আনুন।রোগীকে বিশ্রাম করান এবং শুয়ে না রেখে আধশোয়া অবস্থায় রাখুন। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শে নাইট্রোগ্লিসারিন বা অ্যাসপিরিন প্রয়োগ করতে পারেন (যদি রোগীর হার্টের সমস্যা থাকে এবং ডাক্তার এই ওষুধ আগে দিয়েছেন)।
৩. শ্বাস-প্রশ্বাস পর্যবেক্ষণ করুন:
রোগীকে শান্ত এবং ধীর শ্বাস নিতে বলুন। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে অক্সিজেন সাপোর্ট প্রয়োজন হতে পারে।
৪. হার্ট অ্যাটাকের জন্য করণীয়:
হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।ডাক্তার যদি অ্যাসপিরিন বা অন্যান্য রক্ত তরলকারী ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন, তবে তা গ্রহণ করুন।
৫. অ্যাসিডিটি বা হজমের সমস্যা হলে:
বুক ব্যথা যদি খাবারের পর বা অ্যাসিডিটি থেকে হয়, তাহলে অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। খাদ্যাভ্যাসের দিকে মনোযোগ দিন, যেমন মশলাযুক্ত বা তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
৬. মানসিক চাপ ও উদ্বেগজনিত বুক ব্যথা:
ব্যথা যদি উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তা থেকে হয়, তাহলে রোগীকে রিলাক্স করার জন্য ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়ার পরামর্শ দিন। ব্যায়াম বা মেডিটেশন চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৭. যদি শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা হয়:
বুক ব্যথা যদি শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসজনিত কারণে হয়, যেমন প্লুরিসি বা পালমোনারি এম্বলিজম, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং শ্বাসনালীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন।প্রয়োজন হলে অক্সিজেন বা ইনহেলার ব্যবহার করুন (যদি শ্বাসকষ্ট থাকে)।
৮. জরুরি অবস্থায় করণীয়:
রোগী যদি অজ্ঞান হয়ে যায় বা শ্বাস নিতে না পারে, তবে CPR (Cardiopulmonary Resuscitation) করার জন্য প্রস্তুত থাকুন, এবং অবিলম্বে জরুরি সেবা ডেকে আনুন। ডিফিব্রিলেটর থাকলে ব্যবহার করুন, যদি হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা থাকে।
৯. ব্যথার অবস্থা এবং সময়কাল লক্ষ্য করুন:
ব্যথা কতক্ষণ ধরে স্থায়ী হচ্ছে এবং ব্যথার তীব্রতা কেমন তা লক্ষ্য রাখুন, কারণ এর মাধ্যমে ব্যথার কারণ নির্ধারণ করা সহজ হয়। যদি ব্যথা দীর্ঘ সময় ধরে থাকে এবং ক্রমশ বাড়তে থাকে, তাহলে দেরি না করে হাসপাতালে যান।
১০. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
বুক ব্যথার প্রকৃতি বুঝতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর পেছনে হৃদরোগ থেকে শুরু করে সাধারণ গ্যাসের সমস্যা পর্যন্ত নানা কারণ থাকতে পারে। এই নিয়মগুলি বুক ব্যথার প্রকৃতি অনুযায়ী প্রয়োগ করা উচিত। বুক ব্যথা হলে সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া এবং চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করা জরুরি।
এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে।
www.royalbangla.com/ডা-অনির্বাণ-মোদক-পূজন-106765094929779
লেখক
ডা: অনির্বাণ মোদক পূজন
এমবিবিএস,বিসিএস(স্বাস্থ্য-রিকমেন্ডেড) ডি-কার্ড (বিএসএমএমইউ,ঢাকা)
এমএসিপি (আমেরিকা), ডিএমইউ(আল্ট্রা)
কনসালটেন্ট -কার্ডিওলজি।
জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
হৃদরোগ, বাতজ্বর ও উচ্চ রক্তচাপ রোগ বিশেষজ্ঞ
চেম্বার :
মাধবপুর মা-মনি হাসপাতাল
হাজী রুপু মিয়া ভবন (সেমকো ফিলিং ষ্টেশনের বিপরীতে)
মাধবপুর, পৌরসভা, হবিগন্জ্ঞা।
তথ্য,সেবা,সিরিয়াল:
০১৭০৫৪৭৬৭২৫,০১৭০৫৪৭৬৭২৪,০১৭০৫- ৪৭৬৭২৬.
রোগী দেখার সময়:
প্রতি বুধবার সকাল ৯.০০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/ডা-অনির্বাণ-মোদক-পূজন-106765094929779