নবদম্পতি কিংবা নতুন বিয়ে হওয়া স্বামী স্ত্রীদের কী ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিলে ভালো হবে। তা নির্ভর করে কত বছর বয়সে তাদের বিবাহিত জীবন শুরু হলো। এবং তাদের শারীরিক কিংবা মানসিক সুস্থতা কেমন তার উপর। যদি স্বামী কিংবা স্ত্রীর বয়স আঠারো বছরের কম হয়, তাহলে বিয়ের পর অন্তত দুই বছরের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা উচিত। কারণ একজন অল্পবয়সী মেয়ের জন্য গর্ভধারণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাপার, এমনকি এতে প্রাণনাশের আশঙ্কা থাকে। নতুন দম্পতিদের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণের বেশ কয়েকটি আদর্শ পদ্ধতি রয়েছে।
১) স্বামী নিজে বেরিয়ার মেথড কিংবা কনডম ব্যবহার করতে পারেন। একটি টেম্পোরারি পদ্ধতি এবং এর বহুবিধ সুবিধা রয়েছে। বিয়ের পরপর পরিকল্পিত ভাবে যৌন মিলন অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। এই সময় আবেগের প্রাধান্য থাকে। তাই সব দিক বিবেচনা টেম্পোরারি পদ্ধতি এই সময় সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থা।
২) নতুন দম্পতিদের জন্মনিরোধক হিসেবে সবচেয়ে ফলপ্রসূ হচ্ছে ওরাল contraceptive পিল কিংবা খাবার বড়ি । এই ওরাল পিল নিয়ম অনুযায়ী স্ত্রী খাবে। প্রতি মাসে কিংবা মাসিক ঋতুস্রাবের প্রথম কিংবা পঞ্চম দিন বড়ি খেতে শুরু করতে হয়। প্রতিদিন রাতে খাবারের পর বড়ি খেলে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে কিংবা ভুলে গেলে পরদিন সকালে খেয়ে নেয়া যায়।তবে খাবার বড়ি খাওয়া শুরু করার পর অনেকের প্রথম প্রথম কিছু অসুবিধা দেখা দিতে পারে। যেমনঃ বমিভাব, মাথা ঘোরানো ইত্যাদি। এসব অসুবিধা খুবই সাময়িক এবং অল্পদিন পর কোনো চিকিৎসা ছাড়া কেটে যায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
৩) IUCD (intrauterine, contraceptive ডিভাইস) এটি আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত জন্মনিরোধক পদ্ধতি গুলোর মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে খাবার বড়ি যেখানে গ্রহণযোগ্য না। যেমনঃ ডায়াবেটিস, এজমা কিংবা হাঁপানি, উচ্চরক্তচাপ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সিটি কিংবা কপার-টি সবচেয়ে ভালো। কপার-টি যেকোনো পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে, মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে নেয়া যায় এবং যখন ইচ্ছা আবার খুলে ফেলা যায়। এটি একটি সহজ ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি এবং তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
৪) ছন্দ পদ্ধতি কিংবা সেফ পিরিয়ড পদ্ধতি, যদি নতুন বিবাহিত স্ত্রীর মাসিক ঋতুস্রাব নিয়মিত থাকে তবে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা যায়, কারণ এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা জটিলতা নেই। মাসিক ঋতুস্রাবের প্রথম দশ দিন এবং শেষ দশ দিন মোটামুটি ভাবে নিরাপদ এবং উপরিউক্ত সময়ে মিলিত হলে গর্ভ সঞ্চারের সম্ভাবনা কম থাকে।
৫) জন্মনিরোধক ফোম কিংবা জেলি, জেলি কিংবা ফোম যৌন মিলনের অন্তত পাঁচ মিনিট আগে ব্যবহার করা উচিত। এই পদ্ধতির বিশেষ কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তবে এর ফেইলিউর রেট বেশি। কাজেই শুধু এই পদ্ধতির উপর নির্ভর করা উচিত নয়। এই পদ্ধতি সবচেয়ে ফলপ্রসু হয়, যদি একই সাথে স্বামী কনডম এবং স্ত্রী ফোম ব্যবহার করেন।
এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে।
www.royalbangla.com/dr.hasnahossain
লেখিকা
ডাঃ হাসনা হোসেন আখী
এমবিবিএস, বিসিএস (স্বাস্থ্য)
এমএস (অবস এন্ড গাইনী)
ট্রেইন্ড ইন ল্যাপারস্কপি এন্ড ইনফার্টিলিটি স্ত্রী রোগ ও প্রসূতি বিদ্যা বিশেষজ্ঞ এবং ল্যাপারস্কপিক সার্জন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
নিয়মিত রোগী দেখছেন: মার্কস কনসালটেশন সেন্টার।
প্রতিদিন : বিকেল ৫ টা হতে রাত ৮ টা পর্যন্ত।
সিরিয়াল : 01729-269437.
সিরাজ মার্কেট (২য় তলা), কচুক্ষেত, ঢাকা-১২০৬। (ফুট ওভার ব্রিজের পাশে)
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/dr.hasnahossain