আসুন সহজে বুঝে নিই ,
মোঃ রিফাত, বয়স ২৫, তার কয়েক দিন (Common cold) সর্দি ছিলো, নাকে দিয়ে পানি (Rhinitis) পড়তো, ৭-১০ দিন পর তার পুরো মুখে (facial pain) ব্যাথা ব্যাথা অনুভব, তথা মুখ চাপ চাপ মনে হয়, নাক বন্ধ হয়ে (stuffy nose) আছে,
স্বাভাবিক নিশ্বাস নিতে মনে হয় নাকে কি যেনো আটকে আছে,, আবার নাক দিয়ে পানিও পড়ে। গায়ে হালকা জ্বর ও আছে, আবার সাথে মাথা ব্যাথা। তিনি ডাক্তারের কাছে গেলেন, ডাক্তার বললেন, আপনার সাইনুসাইটিস হয়েছে,
একটা এক্স-রে করে আনুন। আসুন, সাইনুসাইটিস সমপর্কে জেনে নিই
সাইনাস
কোনো হাঁড়ের ভিতরের যদি কোনো গহবর থাকে, তথা বায়পূর্ণ কোনো খালি জায়গা থাকে, তাকে সাইনাস বলে ।
মূলত নাকের আসে পাশের হাঁড় সমূহের ভিতরে কিছু গহবর রয়েছে, যেই গহবর গুলি বাতাস দিয়ে পূর্ণ থাকে, এই গহবর গুলিকে সাইনাস বলে। সাইনাসের কাজ হচ্ছে মাথার ওজন কে হালকা করা । সাইনাস থাকার কারণে আমাদের মাথার ওজন আমাদের অনুভব হয়না।
নাকের আশেপাশে ৪ টা সাইনাস রয়েছে,
সবচেয়ে বড় হচ্ছে ম্যাক্সিলারি সাইনাস, আরো রয়েছে স্পেনয়েড সাইনাস, ইথময়েড সাইনাস, ফ্রন্টাল সাইনাস। এই সাইনাস সমূহ বায়ু দিয়ে পরিপূর্ণ থাকে। নাকের আশেপাশে থাকার কারণে এইগুলিকে প্যারানাসাল সাইনাস বলে।
সাইনুসাইটিস ঃ
যদি প্যারানাসাল সাইনাস সমূহের টিস্যু সমূহে কোনো প্রদাহ হয়, তবে এইটাকে সাইনুসাইটিস বলে। সুস্থ প্যারানাসাল সাইনাস সমূহ বায়ু দ্বারা পূর্ণ থাকে, আর এই সাইনাস সমূহ যখন ফ্লুইড দিয়ে ব্লক হয় যায়, তখন সেখানে প্রদাহ তৈরি হয়, এবং জীবানু বংশবিস্তার করে, এই অবস্থাকে সাইনুসাইটিস বলে।
সাইনুসাইটিস এর কারণঃ
1. এলার্জিক রাইনাইটিস: নাকের মিউকাস মেমব্রেন এর প্রদাহ এবং ফুলে যাওয়াকে রাইনাইটিস বলে, এতে করে নাক ভারি হয়ে আসতে পারে, আবার ন্যাসাল সিক্রেশন হতে পারে, এলার্জেন দিয়ে হলে এলার্জিক রাইনাইটিস বলে। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, দিয়েও হতে পারে।
যখন রাইনাইটিস হয়, তখন নাক বন্ধ হয়ে থাকে, তথা নাকের ভিতরের ভেইন, নাকের মিউকাস মেমব্রেন সব ফুলে গিয়ে নাক গহ্বরের অভ্যান্তরে ব্লকেজ তৈরি হয়, এবং পর্যায়ক্রমে সাইনাসের অভ্যান্তরেও ব্লকেজ তৈরি হতে পারে।
এতে করে প্রদাহ হয়, এবং সাইনুসাইটিস হয়।
2. কমন কোল্ড
3. নাকের পলিপের কারণেও সাইনুসাইটিস হতে পারে
4. DNS, (Deviated nasal septum ) এর কারণেও হতে পারে।
কাদের বেশি হয়
যাদের এলার্জি রয়েছে, যাদের বেশি বেশি কমন কোল্ড হয়, তাদের হবার চান্স বেশি।
উপসর্গঃ
১। মাথা ব্যাথা, সামনের অংশে
২। মুখে ব্যাথা, মুখ ভার ভার অনুভব হওয়া
৩। নাক ভার হয়ে থাকা, কিংবা নাক দিয়ে পানি পড়া, অথবা নাক ব্লকেজ মনে হওয়া।
৪। সর্দি, জ্বর, কাশি হওয়া।
৫। গাঢ়, হলদে রং এর নাসাল ডিসচার্জ
৬।ঘ্রাণ শক্তি হ্রাস পাওয়া
৭। নিঃশ্বাসের সময় ব্যতিক্রমী ঘ্রাণ পাওয়া (Bad breath)
সাইনুসাইটিস এর প্রকারভেদ
একিউট সাইনুসাইটিসঃ উপসর্গ ২-৪ সপ্তাহ থাকে
সাব একিউট সাইনুসাইটিসঃ উপসর্গ ৪-১২ সপ্তাহ থাকে
ক্রনিক সাইনুসাইটিসঃ উপসর্গ যদি ১২ সপ্তাহের অধিক থাকে।
চিকিৎসাঃ
- নাক ক্লিয়ার রাখার জন্য নরমাল স্যালাইন দিয়ে তরল রাখা।
- গরম পানির বাস্প নেওয়া।
- Nasal decongestant ব্যাবহার করা।
- এন্টি হিস্টামিন, মিউকোলাইটি, এন্টিবায়োটিক, ইত্যাদি প্রয়োজন অনুসারে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করবেন।
এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে।
www.royalbangla.com/ DrS-MSadique-105600987900812
লেখক
ডা: এস.এম.ছাদিক
বি ডি এস (ডি ইউ)
এম পি এইচ (অন কোর্স)
পি জি টি (ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারী)
ঢাকা ডেন্টাল কলেজ এন্ড হসপিটাল
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/DrS-MSadique-105600987900812