-
ডায়াবেটিস রোগের প্রকোপ আমাদের দেশে ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। আমাদের দেশে এখন পযন্ত প্রায় ১ কোটি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। প্রতিদিন এই সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ধারনা করা হয় যে, আরো ১কোটি মানুষ জানেই না যে তাদের ডায়াবেটিস আছে। কারন তারা কখনো ডায়াবেটিস পরীক্ষা করেই দেখেনি। আমাদের মানুষ, যখন ঘনঘন প্রস্রাব লাগে বা ঘনঘন পিপাসা লাগে শুধু তখনই ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাই। আপনি হয়ত কাউকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, আপনার কি ডায়াবেটিস আছে? বেশিরভাগ মানুষই উত্তর দেয় "আমার তো ঘনঘন প্রস্রাবও লাগেনা আবার পিপাসাও লাগেনা, তাহলে আমার ডায়াবেটিস নাই"। হ্যা ঘনঘন প্রস্রাব লাগা, পিপাসা লাগা, মেজাজ খিট্খিটে হওয়া, ওজন কমে যাওয়া এগুলো সব ডায়াবেটিসেরই লক্ষন, কিন্তু সব সময় সবার মাঝে সব লক্ষন প্রকাশ পায়না। আবার ডায়াবেটিস নাথাকলেও অন্যকোন কারনেও এসব লক্ষন দেখা দিতে পারে। তাই শুধু রক্তের পরীক্ষার মাধ্যমেই নিশ্চিত হতে হবে যে আপনার ডায়াবেটিস আছে কি না।
প্রি-ডায়াবেটিস এই কথাটার সাথে বেশিরভাগ মানুষই পরিচিত নন। সাধারণ মানুষ ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাই এবং তারা দুইটা রিপোর্ট বোঝে। এক-ডায়াবেটিস আছে আর দুই-ডায়াবেটিস নাই। কিন্তু আরো একটা রিপোর্ট পাওয়া যায়, যেটাকে বলাহয় প্রি-ডায়াবেটিস। খালিপেটে আপনার স্যুগার লেভেল যদি সর্বোচ্চ ৬.১ মিলিমোল/লিটার এর কম আর ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার পর যদি ৭.৮মিলিমোল/লিটার এর কম থাকে, তাহলে বুঝতে হবে আপনার ডায়াবেটিস নাই। এখন মনে করুন খালিপেটে আপনার স্যুগার লেভেল ৬.৩ পাওয়া গেল আর ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার পর ৯.৪ পাওয়া যায়, মানে দুইটাই নরমালের চেয়ে একটু বেশি, তাহলেও কিন্তু আপনার ডায়াবেটিস হয়নি। এটাকে ঝুকি বলাহয়। খালিপেটে ৬.১ থেকে ৬.৯ পর্যন্ত ঝুকি বলাহয়। কিন্তু ৭ হলেই ডায়াবেটিস হয়েছে ধরে নিতে হবে। আর গ্লুকোজ খাওয়ার পর ৭.৮ থেকে ১১ পর্যন্ত ঝুকি, কিন্তু ১১ পার হলেই ডায়াবেটিস ধরা হয়। এখন আপনার রিপোর্ট এ যদি দেখা যায় যে আপনি ডায়াবেটিস এর ঝুকিতে আছেন তাহলে কি করবেন। এখান থেকে পরিত্রান পাওয়ার কোন উপায় কি আছে? জ্বী অবশ্যই আছে। গবেষনা বলছে যে, যাদের রিপোর্ট ঝুকিতে আছে তাদের জীবনের কোন একসময় ডায়াবেটিস হয়ে যাবে। তবে তারা যদি তাদের লাইফস্টাইলে কিছু পরিবর্তন আনেন তাহলে এই ঝুকিটা চলে যাবে, এরজন্য কোন ঔষধের প্রয়োজন নাই। ওজন কম থাকলে বাড়াতে হবে, বেশি থাকলে কমাতে হবে, ঘুমের শিডিউল ঠিক করতে হবে, দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে, আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, মানে প্রোপার ডায়েট চার্ট মেনে চলতে হবে। তাহলেই আপনি ৩-৬ মাসের মধ্যে ডায়াবেটিসের ঝুকিমুক্ত হতে পারবেন। আর এই ব্যাপারে কোন ডাক্তার নয়, একজন পুষ্টিবিদই পারেন আপনাকে সঠিক পরামর্শ দিতে। মনে রাখতে হবে, ডায়াবেটিস সারাজীবনের রোগ। একবার হলে আর জীবনে ভাল হয়না। কিন্তু হওয়ার ঝুকি থাকলে সেটা নিরাময় করা সম্ভব। তাই এখন থেকেই সচেতন হউন। প্রতি ৬ মাসে বা বছরে অন্তত একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করান। এতে রিপোর্ট যদি ঝুকিপুর্ন আসে তাহলে আপনি সতর্ক হতে পারবেন। সুস্থ থাকুন ভাল থাকুন।
ধন্যবাদ
পুষ্টিবিদ মোঃ ইকবাল হোসেন
পুষ্টিবিদ চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল চেম্বারঃ সার্জিস্কোপ হাসপাতাল -২, কাতালগঞ্জ , চট্টগ্রাম , রুম নং -৩০২। শুক্র থেকে বুধবার, সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১০টা। শেভরন, প্রবর্তক মোড়, চট্টগ্রাম, কক্ষ নং-৬৩২। শুধু বৃহস্পতিবার, সন্ধ্যা ৬টা-৯টা।
Nutritionist Iqbal Hossain |
প্রি-ডায়াবেটিস বা ডায়াবেটিস এর ঝুকি |
ডায়াবেটিস |
- royalbangla.com এ আপনার লেখা বা মতামত বা পরামর্শ পাঠাতে পারেন এই এ্যড্রেসে [email protected]
পরবর্তী পোস্ট |
ইউরিন ইনফেকশন: কারণ ও প্রতিরোধের উপায় |