আপনার ঘরের পরিবেশ কেমন!!
আপনার বাসায় মুরগী রান্না হলে আর বাসার সদস্য ৩/৪ জন হলে মুরগীর রান গুলো কাকে কাকে দেন? আপনার হাসব্যান্ড কে একটা আরেকটা কি বাচ্চাকে ?
নাকি নিজে একটা খেয়ে নেন আরেকটা বাচ্চাকে? নাকি মাদার তেরেসা হয়ে যান থাক আমার স্বামী আর বাচ্চা খেলেই পেট ভরবে!!
আপনার হাসব্যান্ড অফিস শেষে ফেরার পথে বাচ্চার পছন্দের খাবার ধরেন কেক আনলো ১ পিস! আপনি কি করেন বাচ্চাকে দিয়ে দেন? নাকি নিজেও একটু ভাগ করে খেয়ে নেন! কি করেন? আরে বাচ্চার খাবার মা খায় নাকি? জল্লাদ মা বলবে লোকে!
বাসায় থাকা দাদা দাদী / নানা নানী যখন বাসায় তার একমাত্র প্রিয় নাতি/নাতনীর জন্য গিফট আনে বা খাবার আনে হয়তো আর কারো জন্য আনে না। এমন গিফট গুলো বাচ্চার সামনে কিভাবে দেন? এই যে দেখো তোমাকে অনেক ভালোবাসে দিদুন, নানা ভাই তাই তোমার জন্য কত সুন্দর গিফট/ পছন্দের খাবার এনেছে? এভাবে?
এই যে উপরের ৩ টা ঘটনা বললাম এগুলা অহরহ ই আমাদের সাথে আমাদের বাসাতে ঘটে! কিন্ত আপনি কি জানেন এই ধরনের পরিবেশ গুলো বাচ্চার ভালো ভাবে বেড়ে উঠাকে প্রভাবিত করতে পারে!
যখন আপনি মুরগীর ভালো অংশ গুলো কেবল বাচ্চাকেই দিবেন তখন সে ধরেই নিবে এই অংশের ভাগ তার ই! অন্য বাসাতে গেলে, রেস্টুরেন্ট গেলে সে ওই অংশের জন্য ই জেদ ধরবে। না দিলে কান্নাকাটি সিন ক্রিয়েট। পরিস্থিতি সামলাতে আপনি তড়িঘড়ি দিয়ে দিবেন। আর এভাবেই সে সব জায়গা তেই এমন করবে।।
বাসায় মুরগী আনলে রানের পিস গুলো আলাদা করে জমাবেন। ৪/৬ পিস জমে গেলে একদিন শুধু রানের পিস ই রান্না করবেন। সবাই মিলে একি অংশ। ব্যস হিসাব সোজা। পতিদেব জামাই ঘাম ঝরিয়ে ইনকাম করে বলে তাকে শুধু রান ই দিবেন। তাহলে বাকি জীবন সবাই ধরে নিবেন আপনার কোন মূল্য নাই, আপনারে যেমন তেমন দেয়া যায়, আপনারে ভালো কিছু না দিলেও সমস্যা নাই মেনে নিবেন।
অফিস থেকে বর ফেরার সময় বাচ্চার জন্য কিছু আনলে আপনার জন্য ও কিছু আনতে বলবেন ৫ টাকার বাদাম হলেও! যদি না আনে তাহলে কারো জন্য ই কিছু আনার দরকার নাই। শুধু বাচ্চার জন্য এক পিস কেক আনলে বাচ্চাকে বলবেন এই যে দেখো বাবা আমাদের জন্য এক পিস কেক এনেছে। চলো ভাগ করে খাই! বাসায় ৩ জন থাকলে ৩ টুকরা করবেন, এক টুকরা নিজে খাবেন বাচ্চার সামনে সাথে বাবার প্রশংসা করবেন এই যে দেখো বাবা কি মজার কেক এনেছে।
বাচ্চা খেলো সাথে শেয়ার করে যে খেতে হয় এটাও শিখবে।
বাসায় বাচ্চার জন্য কেউ কোন গিফট আনলে সেটা দেয়ার আগে বাচ্চাকে কিছু শর্ত দিবেন। কোন কারন ছাড়াই একের পর এক গিফট, খেলনা, খাবার বাচ্চার জন্য ওভার স্টিমুলেশন কোন ভাবেই ভালো না। এভাবে বাসায় থাকা অনেক মানুষের ভেতর শুধু বাচ্চার জন্য কোন কিছু আনা মানে বাচ্চাকে "বস বেবী " বানানো! এই ধরনের বস বেবী রা অল্প তেই জেদ, রাগ, না পেলে ভাংচুর করে! একটা কাজের বিনিময়ে তাকে কিছু দেয়া। অথবা তার জন্য আনার পাশাপাশি বাসার বাকিদের জন্য ও অল্প করে হলেও কিছু আনা দেখলে বাচ্চা বুঝবে সে একাই না, বাকিরাও অনেক গুরুত্বপূর্ন! এতে বাচ্চারা অন্য কে সম্মান করতে, নিজের জিনিস শেয়ার করতে এবং সামাজিক হতে দ্রত শিখে!
আমার বাসার এই সব নিয়মের ক্ষেত্রে আমি ভয়ংকর পসেসিভ থাকি!
এই যে একদিন আমার ছেলের দাদা দাদু, ছেলের জন্য বাইরে থেকে বড় এক স্লাইস কেক আনলো। আমি সেটাকে ৩ ভাগ করে আমার বাচ্চার কেয়ারগিভার, আমার হেল্পিং হান্ড এরপর সামান্য অংশ টুকু ছেলেকে দিয়েছি। কারন আমি চাইনি আমার ছেলে দেখুক এই বাসাতে কেবল তার জন্য ভালো খাবার আনা হয়! আমি চেয়েছি সে শিখুক ভালো খাবার, ভালো জিনিস সবার সাথে শেয়ার করতে খেতে হয়।মানুষ কে দেয়া তে আনন্দ আছে এটা সে শিখে বড় হোক। আর এইসব শেখাতে গিয়ে কিছু সময় কঠিন পরিস্থিতি তৈরির কারনে কেউ যদি জল্লাদ মা ডাকে তাহলে কিন্ত আমার মন্দ লাগবে না!
বাচ্চাকে শেখানোর শুরুটা হোক আপনার ঘরের ইতিবাচক পরিবেশ দিয়ে! শিখুন তারপর শেখান।
এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে।
www.royalbangla.com/নিউট্রিশনিস্ট-সুমাইয়া-সিরাজী-102934114426153
লেখক
নিউট্রিশনিস্ট সুমাইয়া সিরাজী
Bsc (Hon's) Msc (food & Nutrition)
CND (BIRDEM), CCND (BADN)
Trained on Special Child Nutrition
Consultant Dientitiant (Ex)
Samorita Hospital
Mobile: 01750-765578,017678-377442
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/নিউট্রিশনিস্ট-সুমাইয়া-সিরাজী-102934114426153/