যৌন সমস্যা খুবই কমন সমস্যা। কিন্তু বেশিরভাগ সমস্যাই সহজে সমাধানযোগ্য। অর্থাৎ বেশিরভাগ যৌনসমস্যা সমাধান করার জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।যৌনসমস্যা সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা থাকলে এবং সামান্য কিছু লাইফস্টাইল পরিবর্তন করলেই বেশিরভাগ সমস্যাই সমাধান করা যায়। আর অল্প কিছু সমস্যা রয়েছে যেগুলোর জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ে। ভারতীয় উপমহাদেশে বেশিরভাগ মানুষই যৌনস্বাস্থ্য সম্পর্কে অজ্ঞ। এমনকি শিক্ষিত লোকেরাও নানারকম কুসংস্কারে বিশ্বাস করে। কারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সিলেবাসে যৌনশিক্ষার কোন নামগন্ধ নেই। যৌনশিক্ষা ব্যাপারটি নিয়ে সবাই কথা বলতে লজ্জা পায়। যাইহোক , এই ওয়েবসাইটে বেসিক যৌনসমস্যা বিষয়ে আর্টিকেলগুলো পড়লে আশা করা যায় সুস্থ ও স্বাভাবিক যৌনজীবন যাপন করা সম্ভব। নিচে কমন যৌন সমস্যার একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা দেয়া হলো
১। দ্রুত বীর্যপাতের সমস্যা :
দ্রুত বীর্যপাত কেন হয়? কিভাবে হয়?
দ্রুত বীর্যপাত(premature ejaculation) পুরুষদের একটি সাধারণ যৌন সমস্যা।এক থেকে দেড় মিনিটের আগে যদি পুরুষের বীর্যপাত বা ইজাকুলেশন হয়ে যায়, একে আমরা সাধারণত দ্রুত বীর্যপাত বা প্রিম্যাচিউর ইজাকুলেশন বলি। পুরুষ বা তার সঙ্গীনী যতটুকু সঙ্গমের আশা করে তার চেয়ে অনেক দ্রুত যদি বীর্যপাত ঘটে সেটা মোটেও কাম্য নয় এবং এতে একজন বা উভয়েরই কষ্ট হয়। রতিকাজ(foreplay) শুরু হওয়ার সাথে সাথে কিছু পুরুষের বীর্যপাত হয়। অনেকে সঙ্গীর ভেতরে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন,আবার কারো কারো অনুপ্রবেশের পরে খুব দ্রুত বীর্যপাত হয়। যা-ই হোক না কেন, অকাল বীর্যপাত হতাশা সৃষ্টি করতে পারে এবং একজন পুরুষ এবং তার সঙ্গীনীর মধ্যে মন কষাকষি সৃষ্টি করতে পারে।দ্রুত বীর্যপাত রোধ করার উপায় বিস্তারিত জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন।
2| লিঙ্গ শক্ত না হওয়া বা ইরেক্টাইল ডিসফাংশন:
শীতলতা বা লিঙ্গ শৈথিল্য (Erectile dysfunction) কি?
'ইরেক্টাইল ডিসফাংশন' বা পুরুষত্বহীনতা হল এক প্রকারের যৌন রোগ যখন যৌন মিলনের সময় পুরুষের যৌনাঙ্গ বা লিঙ্গের পূর্ণাঙ্গ উত্থান হয়না বা উত্থান হলেও সেটি দীর্ঘস্থায়ী হয় না। সহজ কথায়,লিঙ্গ ঠিক মতো শক্ত না হলে তাকে আমরা ইরেক্টাল ডিসফাংশন বলি । যাতে লিঙ্গ উত্থান হয় না বা লিঙ্গ উত্থিত অবস্থা ধরে রাখতে পারে না বা ।যেটা গ্রাম অঞ্চলে ধ্বজভঙ্গ বা যৌন অক্ষমতা বলে থাকে!পুরুষের জীবনে কোন না কোন সময় কম বেশি এই সমস্যা হয়ে থাকে।বয়স ভেদে এটা ভিন্নরুপে দেখা দিতে পারে! যে পুরুষের লিঙ্গ ঠিকমতো শক্ত হয়না সেই পুরুষ ই তার কষ্ট বুঝে।নিজেকে তখন পুরুষবলে মনে হয় না।স্ত্রীর কাছে লজ্জিত হতে হয় আর এই লজ্জায় দিন দিন রোগটিকে বাড়িয়ে দেয়।
মনের শান্তি চলে যায় যদিও তার অন্য কোন সমস্যা নাই। এটাকে দুইভাগে ভাগ করা হয়
১) প্রাইমারি( জন্মগতভাবেই)
২) সেকেন্ডারি ( পরবর্তীতে কোন কারন বশত হয়েছে)
যাহোক, ইরেক্টাইল ডিসফাংশন সমস্যার সমাধান ও করণীয় জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন।
৪। পুরুষদের ইনফার্টিলিটি বা সন্তান না হওয়া
পুরুষদের ইনফার্টিলিটি
শহরাঞ্চলে বন্ধ্যাত্বের হার বেশি। মেয়েরাই প্রধানত বন্ধ্যাত্বের জন্য দায়ী এই ভাবনাকে সম্পূর্ণ ভুল প্রমাণিত করে পুরুষদের মধ্যে সন্তান উৎপাদন ক্ষমতা ক্রমশ কমে যাচ্ছে।সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে মেয়েদের তুলনায় ১.৫% বেশি বন্ধ্যাত্বের সমস্যা দেখা যাচ্ছে পুরুষদের মধ্যে। মহিলাদের পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ, এন্ডোমেট্রিওসিস, পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ ও জেনিটাল টিবির জন্য বন্ধ্যাত্ব দেখা যায়।সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসার সাহায্যে সমস্যা সারিয়ে তোলা যায়। পুরুষদের সমস্যা হলে মেল ইগোর কারণে একদিকে চিকিৎসা করাতে গাফিলতি করেন, অন্যদিকে অবসাদ তৈরি হয়।যাহোক, পুরুষদের ইনফার্টিলিটি সমস্যার সমাধান ও করণীয় জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন।
৫। মহিলাদের ইনফার্টিলিটি
সাধারণ জীবনযাত্রার পরিবর্তন, পরিকল্পিত পুষ্টি এবং একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট ডিম্বাণুর মান উন্নত করতে ও গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে। বেশ কয়েকটি কারণ উৎপাদিত ডিম্বাশয় এবং ডিম্বাণুর উপর প্রভাবকে নির্ধারণ করে। স্বাস্থ্যকর প্রজনন উর্বরতা পরিবেশগত কারণ, হরমোন, স্ট্রেস, স্বাস্থ্যকর ঋতুস্রাব চক্র, প্রচলন এবং ডায়েটের উন্নয়ন । মহিলাদের ইনফার্টিলিটি দূর করার ডায়েট সম্পর্কে জানতে এই লিংকটি ক্লিক করুন। ।
৭। বীর্যের সমস্যা (পাতলা বীর্য)
পানির মতো পাতলা বীর্য??
যৌন মিলনের শুরুতে বা যৌন উত্তেজনায় লিঙ্গের মাথায় পিচ্ছিল জাতীয় পদার্থ বের হয় আর এটা যৌন মিলন কে সুগম করার জন্য। এতে কোন শুক্রানু থাকে না।এটা আসে পুরুষের প্রস্টেট নামক গ্রন্থি বা গ্লান্ড থেকে সাথে যোগ হয় কাউপার নামক গ্রন্থি, সিমেন থলির কিছু মিউকাস জাতীয় পদার্থ। এখন আসি মূলত বীর্য বা সিমেন বা পুরুষের যৌন নির্যাস এতে কি কি উপাদান আছে???
পানির মতো পাতলা বীর্য সমস্যা দূর করার ডায়েট সম্পর্কে জানতে এই লিংকটি ক্লিক করুন।
৮। পর্ন আসক্তি
যারা পর্ণ এডিক্টেড তারা কিভাবে পরিত্রান পেতে পারেন??
প্রতি দিন কত তরুন যে এই ফাঁদে পা দিচ্ছে।সারা পৃথিবীতে আজ অসংখ্য মানুষ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত। এই আসক্তির কারণে অনেক পরিবারে বিপর্যয় নেমে আসছে। অথচ বেশির ভাগ মানুষই এর ভয়াবহতা সম্পর্কে অবগত নন ।
৯। স্বপ্নদোষ এবং স্বপ্নদোষ সম্পর্কে ভুল ধারনা
স্বপ্নদোষ
স্বপ্নদোষ হলো একজন পুরুষের ঘুমের মধ্যে বীর্যপাতেরঅভিজ্ঞতা। এটাকে ‘ভেজাস্বপ্ন’ও বলা হয়।১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী ছেলেদের এবং প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার প্রাথমিক বছরগুলোতে স্বপ্নদোষ খুব সাধারণ।তবে বয়ঃসন্ধিকালের পরে যেকোনো সময় স্বপ্নদোষ হতে পারে। এটার সাথে যৌন উত্তেজক স্বপ্নের সম্পর্ক থাকতে পারে, আবার নাও পারে। আবার পুরুষদের উত্থান ছাড়াই স্বপ্নদোষ ঘটতে পারে। ঘুম থেকে জাগার সময় কিংবা সাধারণ ঘুমের মধ্যে যে স্বপ্নদোষ হয়, তাকে কখনো কখনো 'সেক্স ড্রিম' বলে। মহিলাদের ঘুমের মধ্যে চরম পুলক লাভের অভিজ্ঞতা ঘটতে পারে।
স্বপ্নদোষ সম্পর্কে জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন
১০। হস্তমৈথুন আসক্তি ( অতিরিক্ত হস্তমৈথুন করা)
প্রথমেই মনে রাখতে হবে, হস্তমৈথুন বা স্বমেহন কোন অপরাধ নয়। এটা প্রাণীদের একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।এটা করে ফেলে অপরাধবোধে ভুগবেন না। এমন হলে ব্যাপারটা সব সময় মাথার মধ্যে ঘুরবে এবং এ থেকে মুক্তি পেতে আবার এটা করে শরীর অবশ করে ফেলতে ইচ্ছে হবে।
মনে রাখবেন আপনি মানুষ। আর মানুষ মাত্রই ভুল করে। এটা করে ফেলার পর যদি মনে করেন ভুল হয়ে গেছে তো সেজন্য অনুশোচনা করবেন না।নিজেকে শাস্তি দেবেন না। বরং দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হোন যাতে ভবিষ্যতে মন শক্ত রাখতে পারেন। হস্তুমৈথুন থেকে আস্তে আস্তে মুক্তি পেতে বিস্তারিত জানতে এই লিংকে ক্লিক করুন