মুখের অভ্যন্তরে ঘা এর কারণ
* অধিক মানসিক চাপের ফলে * মুখে আঘাতের ফলে সৃষ্ট ক্ষত থেকে * দাঁতের মাজনের কিছু ক্ষতিকর রাসায়নিকের কারণে * ফলিক এসিড, আয়রন, ভিটামিন-১২ ইত্যাদি কিছু পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি * হরমোনের পরিবর্তনের প্রভাবে এছাড়াও খাদ্যের এলার্জি বা কিছু ব্যাক্টেরিয়ার প্রভাবেও মুখের ভিতরে ঘা দেখা দিতে পারে। খুবই যন্ত্রণা দায়ক এ ক্ষত খাবার খাওয়া এবং কথা বলায় বেশ সমস্যার সৃষ্টি করে তবে, মারাত্মক কোন প্রভাব নেই এর। সাধারণত সপ্তাহ দুয়েক পর কোন চিকিৎসা ছাড়াই সেরে যায়। তবে যন্ত্রনা কমিয়ে রাখার ও দ্রুত সেরে ওঠার জন্য কিছু নির্দেশনা দেওয়া হলো- * জিহ্বা দিয়ে ঘন ঘন আঘাত করা বা খোঁচা দেওয়া উচিৎ নয় * ঝাল ও এসিড যুক্ত খাবার বর্জনীয় * প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিৎ * পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে * দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রনে রাখার চেষ্টা করতে হবে * মুখে ব্রাশ করার সময় ও খাওয়ার সময় যেন আঘাত না লাগে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে মুখের অভ্যন্তরীণ ক্ষতের ব্যাথা কমিয়ে রাখার কিছু ঘরে বানানো ব্যবস্থার উল্লেখ করা হলো-- ১। লবণ পানির ব্যবহারঃলবণ পানির গড়গড়া করা মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায় খুবই সহজ ও কার্যকরী পদ্ধতি। যে কোন ধরনের মুখের ক্ষতের জন্য তা বেশ যন্ত্রণাদায়ক, তবে ক্ষত শুষ্ক রাখতে ও দ্রুত সেরে উঠতে ভীষণ কার্যকরী। * আধা-কাপ উষ্ণ পানির মধ্যে ১ চামচ খাবার লবণ গুলে নিতে হবে। * ২৫/৩০ সেকেন্ড এর জন্য মুখের মধ্যে নিয়ে নাড়াচাড়া করে ফেলে দিতে হবে। * দৈনিক কয়েকবার এ পদ্ধতি অনুসরন করা যেতে পারে।
- ২। দইঃ মুখের ঘা এর একেবারে নির্দিস্ট কারণ অজানা। তবে কিছু ব্যাক্টেরিয়া এটি সৃস্টির জন্য দায়ী হিসেবে চিহ্নিত হরা হয়। দই এ ধরনের ব্যাক্টেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে। * প্রতিদিন ১ কাপ দই খেতে হবে।
- ৩। মধুঃ ব্যাথা এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে মধু দারুণ উপকারী উপাদান। * ১ চামচ মধু ও ১/৪ চামচ কাঁচা হলুদের গুঁড়ো একত্রে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে। * আক্রান্ত স্থানে এই পেস্ট লাগিয়ে রেখে ১৫/২০ পর পরিষ্কার করতে হবে। * অথবা শুধু ১ চামচ মধুও আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে রাখলে ব্যাথা উপশম হয়।
- ৪। যষ্ঠী মধুঃ দারুণ রোগ প্রতিরোধী একটি ঔষধি গুন সম্পন্ন এক প্রকার গাছের শিকড় এটি, যা সকলে যষ্ঠী মধু হিসেবেই চেনে। মুখের ক্ষত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে দারুণ। * ২/৩ কাপ পানির মধ্যে ১ চামচ যষ্ঠী মধু গুঁড়ো মিশিয়ে ৩/৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। * এ মিশ্রণ মুখে নিয়ে গড়গড়া করলে মুখের ঘা দ্রুত সেরে যায়।
- ৫। তুলসী পাতাঃ ঘা সৃষ্টিকারী অনেক ধরনের জীবাণু প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে তুলসী পাতার। * প্রতিদিন কয়েকটি পাতা চিবিয়ে খাওয়া যেতে পারে। * হালকা গরম পানিতে এ পাতা ডুবিয়ে মাউথ ওয়াশ হিসেবে ব্যবহার করলেও তা দ্রুত ক্ষত সারিয়ে তোলে।
- ৬। শুকনো মরিচঃ শুকনো মরিচে ক্যাপসিসিন নামক উপাদান থাকে যা অত্যন্ত যন্ত্রণা সৃষ্টি করে যা বিশেষ করে ক্ষত স্থানে অসহ্য ব্যথা অনুভূত হয়। তবে ক্ষত খুব দ্রুত সারিয়ে তুলতে এটি দারুণ উপকারী। * সামান্য শুকনো মরিচের গুঁড়ো সরাসরি ক্ষত স্থানে চেপে ধরতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় যন্ত্রণা হলেও দ্রুত তা সেরে যাবে। এছাড়াও অ্যালোভেরার রস, নারিকেল তেল, লবঙ্গ তেল প্রভৃতি উপাদান ব্যাথা উপাদানে বেশ ভালো কাজ করে। তবে এসবের পরেও যদি সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে ঘা না সেরে যায় তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।