‘ডায়েট’ খুব ছোট্ট একটি শব্দ। তবে এর গুরুত্ব অনেক বেশি। একজন মানুষ সারা জীবনে কতটা সুস্থ থাকবে, তার বেশির ভাগই নির্ভর করে তার ডায়েট বা খাদ্যাভ্যাসের ওপর। ওজন কমানো বা বাড়ানোসহ যেকোনো রোগের প্রতিকার ও প্রতিরোধে ডায়েটের ভূমিকা অনন্য। বর্তমানে ওজন কমাতে বিভিন্ন রকমের ডায়েট চালু আছে।
এখন পর্যন্ত বেশির ভাগ মানুষ মনে করেন, ডায়েট হলো ওজন কমানোর একটি প্রক্রিয়া। আসলে তা নয়। সময়মতো পরিমিত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াই ডায়েট।
একই ডায়েট চার্ট সবার জন্য নয়
একজন ব্যক্তির ডায়েট চার্ট অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। বয়স, ওজন, উচ্চতা, লিঙ্গ, পেশা, রক্তে কোলেস্টেরল লেভেল , কিডনির কার্যকারিতা, শরীরে চর্বির পরিমাণ, প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসসহ অনেক বিষয় বিবেচনা করে তবেই কোনো ব্যক্তির ডায়েট চার্ট তৈরি করতে হয়। সে ক্ষেত্রে অনলাইনে পাওয়া ডায়েট চার্টগুলো কোনো কিছু বিবেচনা না করেই তৈরি করা হয়। অথবা কোনো একজনের জন্য তৈরি করা হয়। যেমন—১৫ বছরের এক শিশুর ডায়েট চার্ট আর ৫০ বছর বয়সী এক ব্যক্তির ডায়েট চার্ট একই রকম হবে না। আবার ১৫ বছর বয়সী সব শিশুর ডায়েট চার্ট একই রকম না-ও হতে পারে। এ জন্য অনলাইনে পাওয়া ডায়েট চার্ট বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
ডায়েটে কি ক্ষুধা সহ্য করতে হবে?
ডায়েটে ক্ষুধা সহ্য করতে হবে না। আপনি যদি আপনার শরীরের প্যারামিটারগুলো বিবেচনা করে সঠিক ডায়েট চার্ট মেনে চলেন, তাহলে আপনার ক্ষুধার অনুভূতি থাকবে না। আপনি যদি ক্ষুধা সহ্য করে ডায়েট করেন, তাহলে আপনি আপনার সারা দিনের কাজকর্মগুলো ঠিকভাবে করতে পারবেন না। অর্থাৎ আপনি স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন না। আপনি যদি আপনার চাহিদার চেয়ে অনেক কম খাবার খান, তাহলে আপনার ক্ষুধার অনুভূতি থাকবে। সঠিক সময়ে পরিমিত পরিমাণে, সঠিক খাবার খেলেই ওজন কমবে।
ক্ষুধা সহ্য করে ডায়েটের পরিণাম
ক্ষুধা সহ্য করে ডায়েটের অর্থ আপনি চাহিদার চেয়ে অনেক কম খাবার খাচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে আপনার শরীরে সব ধরনের ভিটামিন ও মিনারেলসের ঘাটতি হবে। ফলে ডায়েট শুরুর কিছুদিন পরেই এসবের অভাবজনিত লক্ষণগুলো দেখা দেবে। যেমন—
- রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে যাওয়া
- চুল পড়া
- ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
- স্মরণশক্তি কমে যাওয়া
- অতিরিক্ত শারীরিক দুর্বলতা
- কোলেস্টেরল লেভেল বৃদ্ধি
- হঠাৎ হঠাৎ মাথা ঘোরা
- মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া
- হজমশক্তি কমে যাওয়া।
এ ছাড়া ক্ষুধা সহ্য করে ডায়েট করলে অ্যাসিডিটিসহ আলসারের সমস্যা দেখা দিতে পারে। কেননা, পাকস্থলীতে সব সময় কিছু গ্যাস্ট্রিক জুস নিঃসৃত হয়। সেগুলো খাবার হজম করতে কাজ করে। পাকস্থলী যদি খাদ্যশূন্য থাকে, তাহলে সে গ্যাস্ট্রিক জুস অ্যাসিডিটির সমস্যাসহ আলসারের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
তাই যেকোনো উদ্দেশ্যে ,ডায়েট যদি করতেই হয়, তাহলে অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে করুন। এতে আপনি সব ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে মুক্তি পাবেন।
এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে।
www.royalbangla.com/Nutritionist.Iqbal
লেখক
পুষ্টিবিদ মোঃ ইকবাল হোসেন
বিএসসি (সম্মান), এমএসসি (প্রথম শ্রেণী) (ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি)
পুষ্টি কর্মকর্তা
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
জাকির হোসেন রোড, খুলশি।
চট্টগ্রাম।
চেম্বারঃ
সার্জিস্কোপ হাসপাতাল, ইউনিট-২, কাতালগঞ্জ, চট্টগ্রাম।
প্রতিদিন সন্ধ্যা ৫ঃ৩০-৮ঃ০০ টা
চেম্বারঃ
হাটহাজারী ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।
প্রতি বুধবার বিকাল ৩ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত।
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/Nutritionist.Iqbal