১০০ গ্রাম লিচু বলতে মাঝারি আকারের প্রায় ১০টি লিচুকে বোঝায়। মার্কিন ওষুধ প্রশাসন বিভাগ বলছে, প্রতি ১০০ গ্রাম লিচুতে ৬৬ কিলোক্যালরি শক্তি ও ১৬ গ্রাম শর্করা রয়েছে। চর্বি একেবারেই নেই। আরও আছে ৭১ মিলিগ্রাম ভিটামিন 'সি ', ১৭০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১৪ মাইক্রোগ্রাম ফলেট এবং সামান্য পরিমাণ (১মিলিগ্রাম) সোডিয়াম।
এবার আসি স্বাস্থ্যের জন্য কী উপকার করে লিচু
রোগ প্রতিরোধ করে -
লিচুতে উপস্থিত ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
ডায়েটারি ফাইবারে পূর্ণ লিচু হজম ক্ষমতা বাড়াতে ও পেট পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে-
পটাসিয়াম দ্বারা পূর্ণ থাকায় ও কম সোডিয়াম থাকায় রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ।এছাড়াও এতে থাকা কপার রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বাড়ায়।
ওজন কমাতে সাহায্য করে-
লিচুতে প্রচুর পরিমান ফাইবার রয়েছে যা ওজন কমাতে সাহায্য করে । বেশি পরিমাণ পানি ও সামান্য ফ্যাট থাকার জন্য ক্যালোরিও কম তবে অনেক বেশি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
হাড় মজবুত করে-
এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ ও কপার থাকায় তা হাড়ের গঠনে সাহায্য করে এবং হাড় মজবুত করে তোলে।
ক্যালসিয়ামের অভাব মেটায়-
বয়স্ক নারী যাদের মেনোপজ হয়ে গেছে, তাদের জন্য লিচু যথেষ্ট উপকারী। কারণ এসব নারীর অতিমাত্রায় ক্যালসিয়ামের অভাব হয়।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে-
এতে অবস্থিত ফ্ল্যাভানয়েডস নামক উপাদান স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
ত্বক সুন্দর রাখে-
লিচুর অলিগোনল নামের উপাদান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লুয়েঞ্জা হিসেবে কাজ করে যা ত্বকে ক্ষতিকর অতি বেগুনি রশ্মির প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করে।
ওইযে মুরব্বীরা বলেন না?অতিরিক্ত কিছুই ভালো নয়।আপনাদের যাতে ক্ষতি না হয় আমি কিছু পরামর্শ দিবো।
টিপস-
-ছোট বাচ্চারা লিচু গ্রহণ করলে কোনও অবস্থাতেই খালি পেটে খাবেনা।
-লিচু রক্তের গ্লুকোজ কমাতে সাহায্য করে,তাই ডায়েবেটিসের রোগী বেশি পরিমানে লিচু খাবেনা।এ ধরনের বিশেষ রোগে ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিয়ে পরিমানমতো গ্রহণ করুন।
-ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন ও দুপুর গ্রহণ করুন।
-লিচুতে থাকা ভিটামিন সি এসিডিটির পরিমান বাড়াতে পারে।তাই দুপুরে খাওয়ার ২০-২৫ মিনিট পর খেতে হবে।
-মাত্রাতিরিক্ত লিচু খেলে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে।তাই পরিমানমতো কোনোকিছুই করা যাবেনা
-একটানা অনেকদিন খাবেন না।কারণ লিচু একটানা বেশ কয়েকদিন পরিমানের বেশি খেলে নানা রোগ যেমন রিউমাটয়েড আরথ্রাইটিস, মাল্টিপল স্ক্লেরসিস, লুপাস ইত্যাদি রোগ থাকলে তা বেড়ে যেতে পারে।
-লিচু গরম ফল তাই পরিমানমতো গ্রহণ করে পেটকে শান্ত রাখুন।
-রক্তচাপ এবং রক্তের গ্লুকোজের ওপর সরাসরি প্রভাব থাকাতে যাদের সার্জারির প্রয়োজন তারা সার্জারির পূর্বের দুই সপ্তাহ এবং পরের দুই সপ্তাহ লিচু খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
লেখক
পুষ্টিবিদ সিরাজাম মুনিরা
কনসালটেন্ট ডায়েটিশিয়ান
ইবনেসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কেয়ার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/DietitianMunira