সাধারণত যা খেলে পেট ভরে তাই ই খাবার হিসাবে বিবেচিত। তবে আমাদের খাবার খাওয়ার কিছু উদ্দ্যেশ্য আছে। যে খাবার আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা পুরন করবে তাকেই আমরা খাবার বলব। আর যে খাবারের মধ্যে প্রধান ৬ টি উপাদান বিদ্যমান তাকে আমরা ব্যালান্স ডায়েট বলি।
খাবার আমাদের শরীরের জ্বালানী হিসাবে কাজ করে। আমাদের সারাদিনের কর্মব্যাস্ত জীবনের শক্তির যোগান আসে খাবার থেকে। আমরা পুষ্টিবিদগণ সবসময় সকলকে ব্যালান্স ডায়েট খাওয়ার বিষয়েই পরামর্শ দিয়ে থাকি। যে খাবারে একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাটসহ সবধরনের প্রধান খাদ্য উপাদান উপস্থিত থাকবে।
কিন্তু বর্তমানে দীর্ঘদিন ধরে চলমান কোভিড পরিস্থিতির কারনে অনেকের ক্রয় ক্ষমতা কমে গেছে। সাথে যুক্ত হয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। এমন অবস্থায় আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই দুবেলা দুমুঠো খেয়ে পেট ভরানোর চিন্তা করছে। সেটাও হয়ত অনেকের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আবার আমরা পুষ্টিবিদগণের ডায়েট চার্টগুলো লক্ষ্য করলেই দেখতে পাই যে, সেখানে হয়ত প্রতিবেলায় মাছ মাংস ডিমসহ আরো হরেকরকমের খাবারের নাম। যা আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের পক্ষেই কিনে খাওয়া সম্ভব হবে না।
এমতাবস্থায় আমরা কিভাবে খুব সহজেই আমাদের খাবারগুলো ব্যালান্স করে খেতে পারি?
সকালের নাস্তায় আমরা আটার রুটি/পরোটা/ভাত খাচ্ছি। এরসাথে যদি যেকোন একটা সস্তা সব্জি রাখি সাথে একটু মাঝারী ঘন ডাল। তাহলেই কিন্তু আপনার পুষ্টির চাহিদা মিটে যাবে। ডিম মাংস বা মাছেরমতই ডালও প্রোটিনজাতীয় খাবার।
মধ্যদুপুরে আপনি একটু মুড়ি, খই, পপকর্ন, চিড়াভাজা, সব্জি নুডুলস, বিস্কুট, পাউরুটি এমন যেকোন একটি খাবার খান। সাথে যেকোন একটি মিষ্টি ফল খেতে পারেন। কলা মিষ্টিবরই আম কাঠাল পাকাপেয়ারা আনারস তরমুজ আপেল কমলা মাল্টা যেটা আপনার সাধ্যের মধ্যে থাকে।
দুপুরের খাবারে আপনি ভাতের সাথে শাক-সব্জি মাছ/মাংস ডাল এগুলো খাবেন। তবে মাছ/মাংস খেতে না পারলে আপনি এমন কিছু সব্জি রাখুন যেটা সবজির পাশাপাশি আপনার প্রোটিনের চাহিদাও পুরন করবে।
যেমন আপনি যদি বিচিসহ শিম রান্না করে খান, সেক্ষেত্রে শিমের বিচি থেকে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ হবে আর খোসা থেকে সবজির পুষ্টিগুন পাবেন। সাথে একটু পাতলা ডাল থাকলেই হবে। অথবা আপনি অন্য যে সবজিটা খাবেন সেটার মধ্যে একটু শিমের বিচি বা মটরশুটি দিয়ে রান্না করুন। যদি এটাও সম্ভব না হয় তাহলে যেকোন শাক-সবজির সাথে আপনি ডাল ঘন করে রান্না করে খান। এতেও আপনার খাবার টা একটি মোটামুটি একটা সুষম খাবার(ব্যালান্স ডায়েট) হবে। তবে আপনার যদি কিডনী প্রব্লেম থাকে সেক্ষেত্রে এটা আপনার জন্য প্রযোজ্য নয়।
বিকালে আপনি দুধ বা দুধের তৈরী খাবার খান। সেটা সম্ভব না হলে একটা বাদাম বা বুটভাজা বা শিমের বিচি ভাজা বা মটরশুটি এগুলো খেতে পারেন।
রাতের খাবার টা আপনি সকালের নাস্তার আইটেম দিয়ে বা দুপুরের খাবারেরমত করে সাজাতে পারেন। এভাবে খেলেই আপনি আপনার শরীরের সারাদিনের পুষ্টির চাহিদা পুরন করতে পারবেন।
তবে খাবার অবশ্যই পরিমিত পারিমানে খেতে হবে। অতিরিক্ত খাবার যেমন স্বাস্থ্য ঝুকি বাড়ায় ঠিক তেমনি খাবার কম খেলেও আপনি অপুষ্টির শিকার হবেন। তাই যদি সম্ভব হয় তাহলে জীবনে একবার হলেও একজন পুষ্টিবিদের সাথে কথা বলে পুষ্টি বিষয়ক পরামর্শ নিন।
এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে।
www.royalbangla.com/Nutritionist.Iqbal
লেখক
পুষ্টিবিদ মোঃ ইকবাল হোসেন
বিএসসি (সম্মান), এমএসসি (প্রথম শ্রেণী)
(ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি)
পুষ্টি কর্মকর্তা
চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল
জাকির হোসেন রোড, খুলশি।
চট্টগ্রাম।
চেম্বারঃ
সার্জিস্কোপ হাসপাতাল, ইউনিট-২, কাতালগঞ্জ, চট্টগ্রাম।
প্রতিদিন সন্ধ্যা ৫ঃ৩০-৮ঃ০০ টা
চেম্বারঃ
হাটহাজারী ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।
প্রতি বুধবার বিকাল ৩ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত।
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/Nutritionist.Iqbal