বর্তমানে প্রাকটিসে প্রায় দম্পতিরা সমস্যা নিয়ে আসেন। কোন সময় একজন এসে তার সঙ্গীর সমস্যা বলতে থাকেন। আবার কখনো দুজনই একসাথে আসেন। গত একমাসে দাম্পত্য সমস্যার পাশাপাশি যে কয়েকটি বাচ্চা মোবাইল আসক্তির সমস্যা নিয়ে এসেছে আশ্চর্যজনকভাবে সবার পিতামাতারই দাম্পত্য কলহ ছিল। তারমানে দাম্পত্য কলহ বাচ্চাদের স্বাভাবিক বিকাশের জন্য মারাত্মক অন্তরায়।
দাম্পত্য কলহ প্রশমনের অনেক কৌশল রয়েছে। এসব দক্ষতার মধ্যে সঙ্গীর মৌখিক প্রসংশা করা খুবই গুরুত্বপুর্ণ উপাদান। মৌখিক প্রসংশার মাধ্যমে দুজনের যোগাযোগ বাড়ে, একজন আরেকজনের প্রতি মানসিক টান বেড়ে ভালোবাসা গভীর হয় এবং বাচ্চারাদেরও ইতিবাচক মানসিক বিকাশ হয়।
মৌখিক প্রশংসা বিভিন্নভাবে করা যায়। উদাহরণস্বরূপ;
আপনি বললেন, 'তোমাকে রঙ্গিন পোষাকে দারুন মানায়'
'তোমার টিপটা দেখতে খুব সুন্দর'
'তোমাকে এই স্যুটে খুব সুন্দর লাগে,
'তুমি আমাদের জন্য এত পরিশ্রম করো সত্যিই তুমি সেরা',
'তোমার এই গুনাবলির কারনে তোমাকে এত ভালোবাসি',
'বাসার এই কাজগুলো তুমি করো জন্য আমাদের সংসার ভালো চলে' অথবা আপনার মতো করে মৌখিক প্রসংশা করা যায়।
মনে রাখবেন ভালবাসার উদ্দেশ্য হলো আপনি যা চান এমন কিছু পাওয়া নয় বরং আপনি যাকে ভালবাসেন তার মঙ্গলের জন্য কিছু করছেন। ইতিবাচক শব্দ ব্যবহার করে আপনার সঙ্গীর প্রসংশা করলে তিনি অনুপ্রানিত হয়ে একই ধরনের শব্দ ব্যবহার করবেন এবং আপনার ভালোবাসার বন্ধন দৃঢ় হবে।
ইতিবাচক শব্দ ব্যবহার করে দাম্পত্য সম্পর্ক ভালো করতে নিচের কৌশলগুলো ব্যবহার করতে পারেন;
-আপনি একটি ডায়েরী লেখার অভ্যাস করুন, যে ডায়েরীটি হবে ভালোবাসার ডায়েরী, এই ডাইরিতে আপনি আপনার সঙ্গীর জন্য প্রতিদিন নতুন নতুন ইতিবাচক বাক্য খুজে বের করে লিখুন।
- প্রতিদিন নতুন নতুন বাক্য ব্যবহার করে আপনার সঙ্গীর প্রসংশা করতে পারেন।
- আর্টিকেল, ম্যাগাজিন, রেডিও, টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ইতিবাচক বাক্য বের করে ভালোবাসার ডায়েরীতে লিখে রাখতে পারেন। মাঝে মাঝে এই বাক্যগুলো পড়ুন এবং আপনার সঙ্গীকে উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত বাক্য বলুন।
-সঙ্গীকে নিয়ে ভালোবাসার চিঠি, প্যারাগ্রাফ লিখুন কিংবা কোন কবিতা ভালোবাসার ডায়েরীতে লিখে রাখতে পারেন, যা বিশেষ দিনগুলোতে তাকে বলতে পারেন।
-আপনার সঙ্গীর বাবা-মা, ভাই বা বোন বা পরিবারের অন্য সদস্যদের সামনে তার প্রসংশা করুন এবং তার ইতিবাচক কথাগুলো বলুন। এতে আপনি দ্বিগুন লাভবান হবেন, আপনার সঙ্গীর ভালোবাসা বাড়বে এবং তার পরিবার আপনাকে খুব ভালো জামাই বা বউ হিসেবে মূল্যায়ন করবেন।
- আপনার সঙ্গীর ভালোলাগা বিষয়গুলো খুজে বের করুন এবং তার এই গুনগুলো কতটা পছন্দ করেন সেটা তাকে জানান।
- আপনার সঙ্গীর সামনেই বাচ্চাদের শুনান তার বাবা বা মা কতটা ভালো। গল্পের ছলেও বাচ্চাদের বাবা বা মায়ের ইতিবাচক দিকগুলো বলতে থাকবেন।
এরপরও সমস্যা হলে প্রয়োজনে মানসিক সেবা নিন।
এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে।
www.royalbangla.com/jianur.kabir
লেখকঃ
জিয়ানুর কবির
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিষ্ট
বি-এস.সি (অনার্স), সাইকোলজি
পিজিটি (সাইকোথেরাপি)
এম.এস ও এম.ফিল (ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি)।
কল্যাণ মানসিক হাসপাতাল
দক্ষিণ কল্যানপুর,মিরপুর রোড, ঢাকা
ফোন নম্বর:০১৭৪৮৭৮৭৮২৩
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/jianur.kabir