Empathy বা সহমর্মিতা হল সংবেদনশীলভাবে অন্যান্য লোকেরা কী অনুভব করে তা বুঝতে, তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে জিনিসগুলি দেখতে এবং তাদের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করার ক্ষমতা। মূলত, এটি নিজেকে অন্য কারও অবস্থানে স্থাপন করে তাদের অনুভূতি বোধ করা। উদাহরণস্বরুপ, আপনি যদি অন্য ব্যক্তির জুতোয় পা দিয়ে হাঁটেন তাহলেই সেই ব্যক্তি কি অনুভব করছে তা বুঝতে পারবেন । প্যারেন্টিংয়ের ক্ষেত্রে পিতা-মাতা ও সন্তানের মধ্যে সহমর্মিতা নিয়ে আজকের লেখাটি সাজানো।
প্যারেন্টিংয়ে সহমর্মিতার গুরুত্বঃ
সহামর্মিতার মাধ্যমে বাচ্চাদের সাথে পিতামাতার ইতিবাচক সম্পর্ক হয়। বিচারহীনভাবে বাচ্চাদের দৃষ্টিভঙ্গি মেনে নেয়ার কারনে পিতা-মাতা সহমর্মিতা ব্যবহার করে সন্তানের দৃষ্টিভঙ্গিটি ভালোভাবে বুঝতে এবং সহ্য করতে সক্ষম হন। পিতা-মাতা সহমর্মি হলে, সহজে রাগান্বিত বা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠবেন না কিংবা সন্তানের প্রতি খারাপ প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না। ফলশ্রুতিতে, সংবেদনশীল সহমর্মিতা সন্তানের অন্তর্নিহীত আবেগীয় শক্তিকে বিকশিত করবে। সহমর্মি পিতামাতা-সন্তানের এটাচমেন্ট স্টাইলকেও উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে। এটি পিতা-মাতা তাদের সন্তানের আবেগীয় জগতকে বিকশিত করে। পিতা-মাতার সাথে সন্তানের ইতিবাচক এটাচমেন্ট বিকাশিত হয় এবং বাচ্চাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যও সঠিকভাবে বিকাশ লাভ করে। গবেষণা থেকে সহমর্মি প্যারেন্টিংয়ের বাচ্চাদের নিম্নের দক্ষতাগুলো দেখা যায় :
- অন্যের প্রয়োজনের প্রতি সংবেদনশীল থাকে।
-মানসিক স্থিতিশীলতা দেখা যায়।
- আরও ভালোভাবে শৈশব এবং কৈশোরের নেতিবাচক আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ।
- ভবিষ্যতে হতাশার বিকাশ হবে না।
-স্বাস্থ্যকর নিজস্ব-সম্মান (self-esteem) বিকশিত হবে।
- কৈশোরে পড়ালেখায় মনোযোগ বাড়বে।
-তাদের সমবয়সীদের কাছে জনপ্রিয় হবে।
- পরবর্তীতে এংজাটির পরিমান কমবে।
-অপরাধে জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা কমবে।
-আত্মহত্যার চেষ্টা করার সম্ভাবনা কমবে।
-সহিংসতা, আগ্রাসন, অসামাজিক এবং অপরাধমূলক আচরণ হ্রাস পাবে
-উল্লেখযোগ্যভাবে ড্রাগ এবং অ্যালকোহল ব্যবহার এবং অপব্যবহার হ্রাস পাবে।
সহমর্মিতার কৌশলঃ
সহমর্মিতা এমন একটি দক্ষতা যা আপনি চাইলে নিজেই প্রাকটিস করে শক্তিশালী করতে পারেন। আপনি যদি সন্তানের সাথে নিজের সহমর্মিতার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে চান, তবে কয়েকটি কৌশল ব্যবহার করতে পারেন:
-কোন বাধা না দিয়ে সন্তানের কথা শোনার চেষ্টা করুন।
- তাদের ভুল ধরা বাদ দিয়ে দিন।
-দেহের ভাষা এবং অন্যান্য ধরণের অপ্রচলিত যোগাযোগের দিকে মনোযোগ দিন।
- আপনি তাদের সাথে একমত না হলেও তাদের বোঝার চেষ্টা করুন।
- বাচ্চাদের জীবন সম্পর্কে আরও জানতে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন।
-নিজেকে তাদের জায়গায় কল্পনা করুন।
-প্রয়োজনে প্রফেশনাল সহায়তা নিন।
জিয়ানুর কবির
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিষ্ট
বি-এস.সি (অনার্স), সাইকোলজি
পিজিটি (সাইকোথেরাপি)
এম.এস ও এম.ফিল (ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি)।
কল্যাণ মানসিক হাসপাতাল
দক্ষিণ কল্যানপুর,মিরপুর রোড, ঢাকা
ফোন নম্বর:০১৭৪৮৭৮৭৮২৩
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/jianur.kabir