কথায় আছে 'খালি পেটে জল আর ভরা পেটে ফল'!
অর্থাৎ ফল খাওয়ারও নির্দিষ্ট সময় ও নিয়ম আছে। কিছু ফল সকালে খেতে হয়, কিছু খাওয়া যায় রাতে, আর কিছু ফল খায় বিকালে বা সন্ধ্যায়।
চলুন জেনে নিই কতগুলো ফল খাওয়ার সময় এবং কারণ।
আপেল:
আপেলের জৈব অ্যাসিড পাকস্থলির অ্যাসিডকে সাধারণের তুলনায় বাড়িয়ে তোলে এবং অন্ত্রের ক্রিয়ায় সাহায্য করে। সকালে ঘুম থেকে উঠে অথবা দুপুরের খাবারের আগে নাস্তা হিসেবে আপেল খেলে বেশি উপকার হয়। যা পুষ্টি সরবরাহে, ওজন কমাতে, ত্বক ভালো রাখতে, হজমক্রিয়া বাড়াতে এবং দীর্ঘসময় শরীর ভালো রাখতে সাহায্য করে।
আঙুর:
সকালে খালি পেটে আঙুর ফল খেলে ভালো হয়। এটি পাচন সিস্টেমকে শুরু করে এবং পুরো দিন ধরে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করতে পারে।
কমলা:
কমলা খিদে দূরে রাখে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সুইডেনে মোট ১৮০০০ নারীকে নিয়ে করা দীর্ঘমেয়াদী এক গবেষণা থেকে জানা গেছে, যারা নিয়মিত কমলা খেয়েছেন, তাদের প্রায় কারোই অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা নেই, অর্থাৎ তাঁরা অতিরিক্ত মোটা হননি। দুপুরে খাওয়ার ১৫ মিনিট আগে কমলা খাওয়া ভালো। এতে আসল খাবার থেকে কম করে হলেও ৩০০ গ্রাম ক্যালোরি কম খাওয়া হবে।
কলা:
পুষ্টিবিদদের মতে, নাশতার সঙ্গে বা পরে কলা খাওয়া যেতে পারে। সকালের খাবারে শুধু কলা খেতে পছন্দ করেন অনেকেই, কিন্তু এ অভ্যাস ত্যাগ করা উচিত। কলায় প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এবং প্রাকৃতিক গ্লুকোজ থাকে। শুধু কলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, তাই সকালের নাশতায় শুধু কলা না খাওয়াই ভালো।
বেদানা:
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, ব্রেকফাস্টের আধা ঘণ্টা আগে অথবা ব্রেকফাস্টের সঙ্গে বেদানা খাওয়া যেতে পারে। সকালে বেদানা খেলে সারাদিনের জন্য এনার্জি পাওয়া যায়, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। বিকেল থেকে সন্ধ্যের মধ্যেও বেদানা খাওয়া যায়।
নাশপাতি:
দিনের শুরুতে নাশপাতি না খেয়ে দিনের শেষ ভাগে নাশপাতি খাওয়াই বেশি ভালো। অর্থাৎ আপনি যদি বিকেলে বা সন্ধ্যার দিকে নাশপাতি খেতে পারেন তাহলে এটি শরীরের জন্য একটু বেশি কার্যকরী হবে। পুষ্টিবিদদের মত অনুযায়ী জানা যায় যে বিকেলে কিংবা সন্ধ্যার দিকে নাশপাতি খেলে পেটের সমস্যা দূর হয়। কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যা দেখা দিতে পারে না। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে নাশপাতির জুড়ি নেই।
পেয়ারা:
প্রতিদিন একটি পেয়ারা খাওয়াই যথেষ্ট। আর গ্লুকোজের মাত্রা বেশি থাকলে খাওয়া যায় অর্ধেকটা। দুটো ভারী খাবারের মাঝের সময়টায় পেয়ারা খেতে হয়। আবার ব্যায়াম করার আগে পরেও পেয়ারা খাওয়া যায়। রাতে পেয়ারা এড়িয়ে চলা ভালো। এতে ঠান্ডা ও কাশির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সবচেয়ে বড় কথা হলো ফল হলো ফল, ফলের ওপর কোনো ওষুধ নাই!
লেখক
মায়েশা রহমান
ফুড এন্ড নিউট্রিশন নিয়ে অধ্যায়নরত