মোলার প্রেগ্ন্যান্সি হল গর্ভাবস্থার একটি বিরল (rare) জটিলতা, যেখানে জরায়ুর ভিতরে অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধি পায়। এটি একটি জেস্টেশনাল ট্রফোব্লাস্টিক ডিজিজ (Gestational Trophoblastic Disease, GTD) এর একটি অংশ। মোলার প্রেগন্যান্সিতে, প্ল্যাসেন্টা বা ভ্রূণের বিকাশ স্বাভাবিক ভাবে হয় না বলে গর্ভাবস্থা continue হয় না। মোলার প্রেগন্যান্সি দুই ধরনের হয়:
১. কমপ্লিট মোলার প্রেগন্যান্সি(Complete Molar Pregnancy):
- এতে কোনো ভ্রূণ বা স্বাভাবিক প্ল্যাসেন্টার টিস্যু তৈরি হয় না।
- শুধুমাত্র অস্বাভাবিক ভাবে ট্রফোব্লাস্টিক কোষ বৃদ্ধি পায়।
- এটি সাধারণত তখন ঘটে যখন একটি শুক্রাণু একটি খালি ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে এবং শুধুমাত্র বাবার ক্রোমোজোম থাকে।
২. পার্শিয়াল মোলার প্রেগন্যান্সি (Partial Molar Pregnancy):
- এতে কিছু ভ্রূণের টিস্যু বা প্ল্যাসেন্টার টিস্যু তৈরি হয়, কিন্তু তা বিকৃত এবং অস্বাভাবিক হয়।
- এটি সাধারণত তখন ঘটে যখন দুটি শুক্রাণু একটি ডিম্বাণু নিষিক্ত করে, যার ফলে অতিরিক্ত ক্রোমোজোম থাকে।
লক্ষণ:
1. যোনিপথে অস্বাভাবিক রক্তপাত (গাঢ় বাদামি বা লাল রঙের)।
2. তীব্র বমি বমি ভাব বা বমি (Hyperemesis Gravidarum)।
3. জরায়ু স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া।
4. গর্ভাবস্থার প্রথম দিকেই প্রিক্ল্যাম্পসিয়ার লক্ষণ থাকতে পারে (যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, প্রোটিনিউরিয়া)।
5. গর্ভস্থ শিশুর হৃদস্পন্দন শোনা না যাওয়া।
রোগ নির্ণয়:
1. আল্ট্রাসাউন্ড: জরায়ুতে অস্বাভাবিক টিস্যু দেখা যায় যা দেখতে তুষার ঝড়ের মত (Snowstorm appearance).
2. রক্ত পরীক্ষা: রক্তে HCG (হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রোপিন) হরমোনের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেশি থাকে।
চিকিৎসা:
১. ডাইলেশন অ্যান্ড কিউরেটেজ (D&C): এই প্রসিডিওরের মাধ্যমে জরায়ু থেকে অস্বাভাবিক টিস্যু অপসারণ করা হয়
2. হিস্টারেক্টমি (Hysterectomy): যদি রোগীর ফ্যামিলি কম্পিট থাকে বা রোগীর ভবিষ্যতে গর্ভধারণের কোন পরিকল্পনা নেই, সেক্ষেত্রে জরায়ু অপসারণ করা হতে পারে।
৩. HCG মনিটরিং: চিকিৎসার পর নিয়মিত HCG মাত্রা পরীক্ষা করা হয়, যাতে কোনো অবশিষ্ট টিস্যু না থাকে।
৪. কেমোথেরাপি: যদি hCG মাত্রা না কমে বা জেস্টেশনাল ট্রফোব্লাস্টিক নিওপ্লাশিয়া (GTN) দেখা দেয়, তবে কেমোথেরাপি প্রয়োজন হতে পারে।
প্রোগনোসিস (Prognosis):
1. বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, মোলার প্রেগন্যান্সির চিকিৎসা সফল হয়, এবং রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে।
2. প্রায় ৮০-৯০% ক্ষেত্রে, D&C বা হিস্টেরেক্টমির পরে কোনো অতিরিক্ত চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না।
3. প্রায় ১০-১৫% ক্ষেত্রে, জেস্টেশনাল ট্রফোব্লাস্টিক নিওপ্লাশিয়া (GTN) হতে পারে, যার জন্য কেমোথেরাপি প্রয়োজন।
4. GTN-এর চিকিৎসার সাফল্যের হার প্রায় 100%, যদি সময়মতো চিকিৎসা শুরু করা হয়।
5. ভবিষ্যতে গর্ভধারণের সম্ভাবনা সাধারণত ভালো থাকে, তবে নিয়মিত মনিটরিং প্রয়োজন।
সতর্কতা:
১. মোলার প্রেগন্যান্সির পর অন্তত ৬ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে কন্সিভ করা উচিত নয়।
২. নিয়মিত HCG মাত্রা পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ, যাতে কোনো জটিলতা না হয়।
মোলার প্রেগন্যান্সি একটি জটিল অবস্থা, তবে সঠিক চিকিৎসা এবং নিয়মিত ফলোআপ করলে এই প্রবলেম থেকে বেরিয়ে আশা সম্ভব।
এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে।
www.royalbangla.com/Rumas-Ultrasound-109856337478413
লেখিকা
ডাঃ সরওয়াত আফরিনা আক্তার (রুমা)
MBBS,MSc(Australia),FCGP,CMU,DMU, Advanced Training on TVS,Fetal Echo,Anomaly Scan,Paediatric Ultrasound,Musculoskeletal Ultrasound, Duplex Doppler,Infertility & Gynae Ultrasound,From Dhaka,Mumbai, Channai, Delhi, Gujarat.
Consultant Sonologist
Aalok HeathCare Ltd
ঠিকানাঃ
আলোক হাসপাতাল লিমিটেড
বাড়ি নং - ০১, রোড নং - ০৫, ব্লক নং - এ, সেকশন- ৬, মিরপুর, ঢাকা ১২১৬।
(মিরপুর ১০ মেট্রো স্টেশনের পশ্চিম পাশে)
সময়ঃ
সকাল - ৮.০০ টা - ৩.০০ টা পর্যন্ত
বিকাল - ৬.০০ টা - রাত্র ১১.০০ পর্যন্ত
(শুক্রবার বিকাল বন্ধ)।
অনুসন্ধানঃ
09678822822, 01769969836.
Appointment এর জন্য
+8801892696007
+8801402801628
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/Rumas-Ultrasound-109856337478413