ছোট বাচ্চারা ঠিক মত খেতে চায় না,খাবার নিয়ে নানা বায়না করে।আবার খাবার তাদের পছন্দমত না হলে নানা সমস্যা হয়। কি ধরনের খাবার দিলে বাচ্চারা সুস্থ ও ভালো থাকবে আমি আজকে সেসব নিয়ে আলোচনা করব :
1.প্রথমত,বয়স অনুযায়ী শিশুর কি পরিমাণ খাবার প্রয়োজন তা মাকে জানতে হবে।এছাড়া, বাচ্চার পছন্দ -অপছন্দের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
2.শিশুর বয়স যদি ছয় মাসের কম হয় তাহলে তাকে শুধু বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। মনে রাখবেন,ছয় মাসের কম বয়সের শিশুকে এ সময় আর কোনো খাবার দেওয়ার দরকার নেই, এমনকি পানিও না।
3.শিশুর প্রতিদিনকার খাদ্য তালিকায় হালকা,অধিক পুষ্টিকর,হজমযোগ্য, টাটকা এবং সহজপ্রাপ্য খাবার রাখতে হবে। যেসব খাবার নরম,সহজে চিবাতে বা গিলতে পারবে এমন খাবার নির্বাচন করতে হবে। সেটা হতে পারে নরম খিচুড়ি। খিচুড়িতে আপনি সব্জির সাথে মাছ-মাংস,ডিম ও দিতে পারেন চাইলে। এছাড়াও দিতে পারেন বাড়িতে বানানো স্যুপ। কেননা এটা আপনার বাচ্চার জন্য যেমন উপকারি, তেমনি স্বাস্থ্যকর ও হবে।
4.শিশুদেরকে কখনই জোর করে খাবার খাওয়াবেন না। ২-২.৩০ ঘন্টা পর পর খাবার দিন।খাবার খাওয়ানোর জন্য ১ টি সময় নির্ধারন করুন এবং চেষ্টা করুন প্রতিদিন একই সময় খাবার খাওয়ানোর। তবে মাঝে মাঝে নিয়মের এদিক সেদিক হতেই পারে,এটা আলাদা কথা।
5.শিশুদের খাবার যতটা সম্ভব ঘরেই তৈরি করুন। বাইরের কেনা খাবার যেমন স্বাস্থ্যসম্মত নয়, তেমনি ব্যয়বহুল এবং এটা আপনার বাচ্চার বেড়ে উঠায় বাধা দিবে।
এছাড়া বাইরের খাবার বাচ্চাদের সহজে হজম হয়না,টেস্টিং সল্ট,এডেড স্যুগার,ইস্ট যোগ করা হয় ফলে অল্প বয়সে এই সব খাবার বাচ্চাদের ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগব্যাধির কারণ হতে পারে। ঘরে তৈরি টাটকা খাবার শিশুকে এ ধরনের ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা করবে।
* সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শিশু যথেষ্ট পরিমাণে পানি পান করছে কিনা সেটা খেয়াল রাখুন, এছাড়াও,পানি অবশ্যই বিশুদ্ধ হতে হবে। খুব ঠান্ডা বা গরম পানি বাচ্চাদের দেওয়া যাবে না।
* শিশুকে মৌসুমি ফল-বিশেষ করে- আম,জাম,কাঠাল,লিচু খাওয়াতে পারেন ( অবশ্যই বয়স অনুযায়ি) ।এসব ফলের রসও দেওয়া যেতে পারে।বাজার থেকে কেনা/প্যাকেটজাত ফ্রুটস জুস বাচ্চাদের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি,অস্বাস্থ্যকর।
* বাচ্চাকে দিনের বিভিন্ন সময় দুধ বানিয়ে খাওয়ান,তা যখন খাওয়াবেন ঠিক তার একটু আগে বানিয়ে খাওয়াবেন, বাচ্চাদের খাবার আগে থেকে বানিয়ে রাখা উচিত না। এতেকরে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শুধু দুধ নয়,অন্য সব খাবারের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অবলম্বন করবেন।
* অনেক মা দেখা যায় ফ্রিজে খিচুড়ি সহ অনেক খাবার রান্না করে রেখে দেন এবং পরে তা গরম করে বাচ্চাদের খেতে দেন,এটা মোটেও করবেন না,এতে করে বাচ্চার নানা স্বাস্থ্যসমস্যা হতে পারে।
* একসঙ্গে বেশি খাবার না দিয়ে অল্প অল্প করে বার বার খাওয়ান।খাবার জন্য বাচ্চাকে কখনও প্রেশার দিবেন না।
* বাচ্চাদের খাবারে ভেরিয়েশন আনুন।আজকে খিচুড়ি দিলে কাল একটু ভাত-সবজি-মাছ দিন। কালারফুল খাবার বাচ্চাদের বেশি আকর্ষণ করে,এই দিকটা খেয়াল রাখবেন।
* শিশু খেতে চায় না বলে অনেক মা টিভি ছেড়ে,কার্টুন/মোবাইলে গান শুনিয়ে খাওয়ান,এ অভ্যাসগুলো বাচ্চাদের জন্য অনেক ক্ষতিকর।আবার শিশু সুস্থ-সবল হওয়া সত্ত্বেও অনেক বাবা-মা মনে করেন যে তার বাচ্চা খায় না,জোর করে বেশি খাওয়াতে চান এমনটা করা একে বারেই উচিত নয়,হিতে বিপরীত হতে পারে।
সবাই নিজ নিজ বাচ্চার খেয়াল রাখবেন।বাচ্চা যেন সুস্থ সবল,স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠে,এজন্য সঠিক পরিমাণে এবং স্বাস্থ্যকর খাবার দিবেন।
এই লেখকের সব লেখা পড়ুন নিচের লিংক থেকে।
www.royalbangla.com/nutritionist.smreety
লেখক
সাদিয়া ইসরাত স্মৃতি
নিউট্রিশনিস্ট
সিরাজুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হসপিটাল, নিউ সার্কুলার রোড, মালিবাগ,মৌচাক।
চেম্বার ডেট :
প্রতি সোমবার : বিকাল ৫.৩০ থেকে ৮.৩০, রোম নং - ৫০৮
এপয়েন্টমেন্ট নম্বর :
01558998823
লেখকের সাথে যোগাযোগ করতে নিচের ফেসবুক পেইজে ক্লিক করুন
www.facebook.com/nutritionist.smreety